শিক্ষক লাঞ্ছনায় এমপি সেলিম ওসমানকে হাজির হওয়ার নির্দেশ

নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য (এমপি) এ কে এম সেলিম ওসমানকে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগে আগামী ১৪ মে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম জেসমিন আরা বেগম এ আদেশে দেন। অপু নামের আরেক ব্যক্তিকেও এ মামলায় আদালতে হাজির হতে বলেছেন তিনি।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আনোয়ারুল কবির বাবুল এ বিষয়ে এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২২ জানুয়ারি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ঢাকার সিএমএম শেখ হাফিজুর রহমান।
মোট ৬৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়। প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর হাইকোর্ট বলেছেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইনের চোখে সবাই সমান।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেলিম ওসমানের নির্দেশেই শিক্ষককে কান ধরে ওঠবসের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। শ্যামল কান্তি ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করেছেন, এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া স্কুলছাত্র মো. রিফাত হাসানকে মারধরের সত্যতা পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভা চলাকালে ১০ থেকে ১২ জন বহিরাগতের নেতৃত্বে শ্যামল কান্তিকে মারধরের সত্যতাও পাওয়া গেছে।
স্থানীয় মসজিদ থেকে ঘোষণা দিয়ে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করেছেন বলে শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে যে প্রচারণা চালানো হয়, সেই প্রচারণা কারা চালিয়েছেন, তা নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।
ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে গত বছরের ১৩ মে বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটে। অভিযোগ ওঠে, স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের নির্দেশে শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে কান ধরে ওঠবস করানো হয়।
ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন।
পাশাপাশি কী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশের পরই পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে বলা হয়, শিক্ষককে কান ধরে ওঠবস করানোর ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় পুলিশ সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।