বিদেশি জাহাজে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার

মোংলা বন্দরের ফেয়ারওয়ে বয়ার গভীর সাগরে বিদেশি জাহাজে আটকে পড়া অনাহারি ১৯ বাংলাদেশি শ্রমিক-কর্মচারীকে উদ্ধার করেছে নৌবাহিনী। বুধবার সকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বিএনএস করতোয়া তাঁদের উদ্ধার করে।
বিকেলে উদ্ধার করা শ্রমিক-কর্মচারীদের বন্দরের হিরণ পয়েন্ট এলাকায় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ট্যাগ বোটে তুলে দেয় নৌবাহিনী।
এসব তথ্য জানিয়ে উদ্ধার হওয়া ক্রেনচালক মো. মাসুদ বলেন, তাঁর সঙ্গে থাকা শ্রমিক-কর্মচারীদের সবাই এখন কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠছেন। নৌবাহিনীর সদস্যরা সবাইকে খাবার সরবরাহসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন। আজ রাতে যে কোনো সময় ট্যাগবোট যোগে মোংলায় পৌঁছাতে পারবে বলে আশা করছেন উদ্ধার হওয়া শ্রমিক-কর্মচারীরা।
২২ জনের মধ্যে ১৯ জনকে উদ্ধার করা হলেও বাকি তিনজন চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া লাইটারের (নৌযান) অপেক্ষায় জাহাজটিতে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, শিপিং এজেন্ট ও স্থানীয় স্টিভিডরস সূত্রে জানা যায়, পানামা পতাকাবাহী এমভি স্টার অথয়া জাহাজে থাকা বিদেশি নাবিকদের জন্য প্রয়োজনীয় বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যসহ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে দুটি বড় বড় লাইটার রওনা হয়েছে। যাতে বিদেশি নাবিকদের দ্রুত সময়ে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করা যায়। এ ছাড়া ওই দুটি লাইটারে বিদেশি জাহাজ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার টনের বেশি কয়লা খালাস করার কথা রয়েছে। এ কয়লা খালাস করা সম্ভব হলে জাহাজের ড্রাফ কমে যাবে ও বিদেশি ওই জাহাজটি দ্রুত সময়ের মধ্যে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে প্রবেশ করতে পারবে।
ইন্দোনেশিয়া থেকে বিদেশি ওই জাহাজটি প্রায় ২৮ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে গত ১০ মার্চ মোংলা বন্দরের ফেয়ারওয়ে বয়ার গভীর সমুদ্র এলাকায় অবস্থান করে। এরপর ২৬ মার্চ লাইটারযোগে জাহাজের কয়লা খালাস কাজে অংশ নেন শ্রমিক-কর্মচারীরা। এর একদিন পর সমুদ্র উত্তাল থাকায় আর কোনো নৌযান জাহাজের সঙ্গে ভিড়তে না পেরে ফেরত যায়। তাই দীর্ঘ সময় সমুদ্রে অবস্থায় করায় জাহাজে থাকা ২৩ বিদেশি নাবিক ও ২২ জন বাংলাদেশি শ্রমিক-কর্মচারী চরম খাদ্য সংকটে পড়েন। শেষ পর্যন্ত মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নৌবাহিনীর সদস্যরা দেশীয় ১৯ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে উদ্ধার করেন।