জুলিয়েটের পর এবার ডিম দিল পিলপিল

সুন্দরবনের করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রে জুলিয়েটের পর এবার ৪৮টি ডিম দিয়েছে পিলপিল। গতকাল শনিবার রাতে কেন্দ্রের পুকুর পাড়ে পিলপিল ডিম দেয়।
আজ রোববার সকালে পিলপিলের ডিমগুলো সংগ্রহ করে বাচ্চা ফুটানোর জন্য ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে। এর আগে গত ৯ মে একই স্থানে ৪৩টি ডিম দেয় কুমির জুলিয়েট।
করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির জানান, শনিবার রাতে কুমির প্রজনন কেন্দ্রের পুকুরটির উত্তর পাড়ে ডিম দিতে শুরু করে কুমির পিলপিল। ভোর রাত পর্যন্ত ৪৮টি ডিম দেওয়ার পর পিলপিল পানিতে নেমে যায়। আজ সকাল ৮টার দিকে ডিমগুলো সংগ্রহ করে তুলে কেন্দ্রের সংরক্ষিত ল্যাবরেটরিতে ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে। ইনকিউবেটরে নির্দিষ্ট পরিমাণ আলো, বাতাস (অক্সিজেন) ও তাপমাত্রায় রাখা ডিমগুলো আগামী ৮৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে ফুটে বাচ্চা বের হবে বলে জানান তিনি।
আজাদ কবির জানান, পিলপিলের দেওয়া ৪৮টি ডিমের মধ্যে চারটি ডিম হালকা ফেটে গেছে। ফেটে যাওয়া ডিমগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। এর আগে গত বছর পিলপিলের দেওয়া ৫১টির মধ্যে ২৮টি ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হয়। ভ্রুণজনিত সমস্যার কারণে বাকিগুলো নষ্ট হয়ে যায়।
সুন্দরবনের করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রে বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে ২১১টি কুমির রয়েছে। এর মধ্যে প্রজনন ক্ষমতা সম্পন্ন প্রাপ্তবয়স্ক তিনটি কুমির রয়েছে। এগুলো হলো- রোমিও (পুরুষ), জুলিয়েট (নারী) ও পিলপিল (নারী)।
২০০৫ সাল থেকে জুলিয়েট ও ২০১১ সাল থেকে পিলপিল প্রতি বছর ডিম দিয়ে আসছে। মূলত ২০০২ সালে বন বিভাগের উদ্যোগে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের (মোংলা) করমজলে বিলুপ্ত প্রায় লোনা পানির প্রজাতির কুমিরের প্রজনন, বংশ বিস্তার ও সংরক্ষণের জন্য কুমির প্রজনন কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়। সেই সময় প্রায় ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮ একর জমির ওপর প্রজনন কেন্দ্রের অবকাঠামো নির্মাণের মধ্যদিয়ে যাত্রা শুরু এই কার্যক্রমের। এরপর ওই কেন্দ্র থেকে এ পর্যন্ত শতাধিক কুমির দেশের বিভিন্ন পার্কসহ সুন্দরবনের নদী-খালে অবমুক্ত করেছে বন বিভাগ।