নিপ্পন এক্সপ্রেসের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য

এনটিভি অনলাইনে গত ২৩ মে প্রকাশিত ‘চুক্তিভঙ্গ, মোংলা বন্দরে নৌযান আটক’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে নিপ্পন এক্সপ্রেস বাংলাদেশ লিমিটেড কর্তৃপক্ষ।
নিপ্পন এক্সপ্রেসের পরিচালক ও চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রেজাউল আলমের পাঠানো প্রতিবাদে বলা হয়েছে, সংবাদের শিরোনামে চুক্তিভঙ্গের কথা বলা হলেও তা ভিত্তিহীন। অপ্রামাণিক ভাষ্য ও আদালত থেকে পাঠানো কোনো নথিপত্রে এর কোনো উল্লেখ নেই। সংবাদের এক স্থানে তামুরা ও রেজাউল আলমকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা আপত্তিকর ও বাংলাদেশ দণ্ডবিধি অনুযায়ী সঠিক নয়। নিপ্পন এক্সপ্রেস কোনো আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান না হলেও সংবাদে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিভ্রান্তিমূলক।
প্রতিবেদকের বক্তব্য : প্রতিবেদনটি মোংলা থানার পুলিশ ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এবং নথিপত্রের ভিত্তিতে লেখা হয়েছে। এখানে প্রতিবেদকের নিজস্ব কোনো বক্তব্য নেই।
চুক্তিভঙ্গের অভিযোগে নিপ্পন এক্সপ্রেস বাংলাদেশ লিমিটেডের বিরুদ্ধে গত ১৯ মার্চ চট্টগ্রামের নিম্ন আদালতে মামলা করেন এস আর এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. হামিদুর রহমান নামের এক ব্যক্তি। মামলায় প্রতিষ্ঠানের মালিক (জাপানি নাগরিক) তামুহিরো তামুরা ও তৎকালীন ব্যবস্থাপক (বর্তমানে পরিচালক ও চিফ অপারেটিং অফিসার) রেজাউল আলমকে আসামি করা হয় বলে বাদী ও মোংলা থানার পুলিশ জানিয়েছে। হামিদুর রহমান মামলার কপি যুক্ত করে গত ১১ মে মোংলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এতে বলা হয়, তাঁর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিপ্পন এক্সপ্রেস বাংলাদেশ লিমিটেড ২০১৬ সালের ২৯ জুন বার্জের মাধ্যমে স্পাইরাল স্পাইলিং পাইপ পরিবহনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। চুক্তি অনুযায়ী, এসআর এন্টারপ্রাইজকে সাতটি শিপমেন্ট দেওয়ার কথা থাকলেও মাত্র দুটি শিপমেন্টের কাজ সম্পন্ন করে। এরপর নিপ্পন এক্সপ্রেস বাংলাদেশ লিমিটেড অন্য একটি কোম্পানির সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করে কাজ করতে থাকে। নিপ্পন এক্সপ্রেস অন্য কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করায় এসআর এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে করা চুক্তি ভঙ্গ হয়।
জিডিতে হামিদুর রহমান উল্লেখ করেন, এই ঘটনার পর তিনি নিপ্পন এক্সপ্রেস বাংলাদেশ লিমিটেডকে আইনি নোটিশ পাঠান। তবু তারা কাজ করতে থাকে। এরপর তিনি চট্টগ্রামের প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার পরও নিপ্পন এক্সপ্রেস লিমিটেড কাজ করতে থাকে। এরপর তিনি আবার আদালতে আবেদন করলে ২৩ এপ্রিল আদালত নিপ্পন এক্সপ্রেস বাংলাদেশ লিমিটেডের কার্যক্রমের ওপর অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি আদালতের ওই আদেশও উপেক্ষা করে তাদের কার্যক্রম চালান।
এই সব কথা উল্লেখ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মোংলার থানার ওসি বরাবর জিডি করেন হামিদুর রহমান।হামিদুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন, নিপ্পন এক্সপ্রেস বাংলাদেশ লিমিটেড আমদানিকারক সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষে ক্যারিয়ার এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। তিনি বলেন, ‘আদালতের আদেশ ও জিডির পর মোংলা থানা পুলিশ মোংলা বন্দরে নিপ্পন এক্সপ্রেসের পণ্যবাহী তিনটি নৌযান আটক করে। এরপর নিপ্পন এক্সপ্রেস হাইকোর্টের মাধ্যমে চট্টগ্রাম জজকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করায়।’
হামিদুর বলেন, নিপ্পন এক্সপ্রেসের যদি বিরুদ্ধে মামলা না থাকে তাহলে কেন প্রতিষ্ঠানটি পরে হাইকোর্টে গিয়ে জজকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছে। মামলায় স্পষ্টভাবে তামুরা ও রেজাউল আলমকে আসামি করা হয়েছে।