কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা, তিনজনের যাবজ্জীবন

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার কাউয়ারেখা গ্রামের রোকসানা আক্তারকে (১৫) অপহরণ করে ধর্ষণ, হত্যার পরে লাশ গুম করার ঘটনায় করা মামলায় তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন দণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার দুপুরে বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শেখ আবু তাহের এ রায় দেন।
দণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন উজিরপুরের কাউয়ারেখা এলাকার স্বপন হাওলাদার, সমীর হালদার ও গৌরাঙ্গ বৈরাগী। রায় ঘোষণার সময় আদালতে শুধু স্বপন হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন।
একই সঙ্গে লাশ গুম করার দায়ে ওই তিন আসামির প্রত্যেককে পাঁচ বছর কারাদণ্ডাদেশ ও পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রধান আসামি স্বপন হাওলাদারকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০৭ ধারায় ১৪ বছর কারাদণ্ডাদেশ ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তিন আসামিকে খালাস দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তাঁরা হলেন স্বপনের বাবা রফিকউদ্দিন হাওলাদার, রফিকের ভাই মোকসেদ হাওলাদার ও স্থানীয় বাসিন্দা সফিজউদ্দিন।
আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নিহত রোকসানা আক্তার গৌরনদী উপজেলার কসবা এলাকার কাদের ফকিরের মেয়ে। নানি অসুস্থ থাকায় সে উজিরপুরের কাউয়ারেখা গ্রামে তাঁর বাড়িতে যায়। অভাবের কারণে রোকসানা তার নানির বাড়ির পাশের রফিক উদ্দিনের বাড়িতে কাজ শুরু করে। সেখানে রফিক উদ্দিনের ছেলে স্বপন হাওলাদার কৌশলে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে রোকসানাকে অন্তঃস্বত্ত্বা করে ফেলে। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।
২০০০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার পর নানির বাড়িতে অন্যদের সঙ্গে টেলিভিশন দেখছিল রোকসানা। ভাত খেতে ডাকার অজুহাতে স্বপন তাকে ডেকে বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে স্বপন ও তাঁর দুই সহযোগী মিলে রোকসানাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে হত্যা করে পাশের অতুল হালদারের বাড়ির শৌচাগারের সেপটিক ট্যাংকে রোকসানার লাশ ফেলে দেয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে সেখান থেকে রোকসানার লাশ উদ্ধার করে স্বজনরা।
ওই ঘটনায় একই বছরের ১৬ মার্চ রোকসানার বড় ভাই লালন ফকির ছয়জনের বিরুদ্ধে রোকসানাকে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা ও তার লাশ গুমের অভিযোগে থানায় একটি মামলা করেন। ২০০৩ সালের ২৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উজিরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হাকিম। আদালতে ২৫ জনের মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় তিনজনকে দণ্ডাদেশ দেন আদালত।