‘প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিয়েই শ্যালিকাকে বিয়ে করেছিলেন এসআই’
নিজের গুলিতে নিহত উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুস সাত্তার (৩২) প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিয়েই শ্যালিকাকে বিয়ে করেছিলেন বলে জানা গেছে। আর এই বিয়েতে পরিবারের অন্যদেরও সম্মতি ছিল বলে জানা যায়।
তবে পুলিশ বলছে, দ্বিতীয় বিয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিন পরিবারের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। আর এ কারণেই এসআই আবদুর সাত্তার তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী সোমা আক্তার শম্পাকে (১৮) হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধরণা করা হচ্ছে।
এসআই আবদুস সাত্তারের প্রথম স্ত্রী ববিতা খাতুন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, প্রায় ১২ বছর আগে খুব অল্প বয়সেই সাত্তারের সঙ্গে তাঁর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছিল। দুজনেরই গ্রামের বাড়ি নাটোর জেলা নলডাঙ্গা এলাকায়। তাঁদের দুই ছেলে রয়েছে। প্রথম ছেলের নাম সাকিব আল হাসান বয়স ১০ বছর, সে এখন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। আর ছোট ছেলের নাম সাদিক বিন সাত্তার বয়স সাড়ে তিন বছর।
জানা গেছে, প্রায় বছর খানেক আগে তাঁর খালাতো বোন সোমা আক্তার শম্পাকে (১৮) বিয়ে করেন আবদুস সাত্তার। তবে এই বিয়ের সময় তাঁর সম্মতি এবং অনুমতি নিয়েই দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন বলে জানান ববিতা।
কী কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে জানতে চাইলে ববিতা খাতুন বলেন, ‘এটা আমি কিছু বলতে পারব না। কারণ তাঁরা আমাদের কাছে থাকত না, আলাদা বাসা নিয়ে থাকত। আমার কাছে থাকেও না, আমি জানি না এটা। এক বছর আগে বিয়ের পর থেকেই তারা আলাদা থাকত।’
পরিবারের মধ্যে এই বিয়েটা নিয়ে কোনো ঝামেলা হচ্ছিল কি না? জানতে চাইলে ববিতা খাতুন বলেন, ‘না না এমন কোনো ইয়ে নেই, ও করছে আমি ওয়াইফ (স্ত্রী) অর্ডার দিয়েছি। আমারও কোনো অবজেকশন নাই বা আমার ফ্যামিলি থেকেও কোনো অবজেকশন নাই। ও খাচ্ছে দাচ্ছে কী হইছে পারিবারিক এটা আমি বলতে পারব না।’
এই সম্পর্কে নিহত এসআই আব্দুস সাত্তারের ভাই মো. বাবলু মিয়া এনটিভি অনলাইনকে বলেন, তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে তাদের পরিবারের সবার ভালো সম্পর্ক ছিল। কেন এই ঘটনা ঘটেছে তা বুঝতে পারছেন না। কারণ সবার সম্মতিতেই এই বিয়ে হয়েছিল।
বাবলু আরো জানান, তাঁর ভাই সাত্তারের লাশ এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আছে। এই ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো মামলা করা হয়নি। লাশ দাফনের জন্য তাঁদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে।
ঘটনা সম্পর্কে রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ সহিদ আলম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গতকাল বিকেলে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের ফোন পেয়ে আমরা দ্রুত ওই বাড়িতে গিয়ে এসআই আব্দুস সাত্তার ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই। পরে সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।’ ঘটনার পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে রাতেই সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটও সেখানে কাজ করেছে। এই ঘটনায় থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা করা হয়নি।
ঘটনাস্থল থেকে এসআই আব্দুস সাত্তারের ব্যবহার করা একটি পিস্তল, আটটি গুলি, দুটি গুলির খোসা, একটি ম্যাগাজিন ও চারটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল রাজধানীর রূপনগর আবাসিক এলাকায় দ্বিতীয় স্ত্রীকে গুলি করে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন বাড্ডা থানার এসআই আবদুস সাত্তার।