জমি নিয়ে বিরোধে আ. লীগ নেতা খুন, গ্রেপ্তার ৪

নওগাঁর রানীনগরে জমির দখল নিয়ে বিরোধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আমজাদ হোসেনকে (৩৫) হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রোয়ার গ্রামে এ ঘটনার জের ধরে
দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারী-পরুষসহ অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ চারজনকে আটক করেছে। এর প্রতিবাদে আজ সোমবার বিকেলে সমাবেশ ডেকেছে আওয়ামী লীগ।
ঘটনার পর উত্তেজিত এলাকাবাসী স্থানীয় মোজাফফর হোসেনের বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. ইসরাফিল আলম ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন। এ মুহূর্তে রোয়ার গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
রানীনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল্লাহিল জামান জানান, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা আমজাদ হোসেনের সঙ্গে একই গ্রামের বোহারা দাখিল মাদ্রাসার সুপার জামায়াতকর্মী মোজাফফর হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে ২৫ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। গতকাল রোববার সকাল ৮টার দিকে আমজাদ জমিতে হালচাষ করার সময় মোজাফফর তাঁকে বাধা দেন। এ সময় দুজনের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। একপর্যায়ে মোজাফফরের লোকজন রামদা দিয়ে কুপিয়ে আমজাদের ডান পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন করে ফেলে এবং বাঁ পায়ের রগ কেটে দেয়।
আবদুল্লাহিল জামান জানান, সংঘর্ষে মোজাফফরের বাবা শফির উদ্দীন (৫৫), সমর্থক নুর উদ্দীন (২৮), আবদুর রহমান (৭০), হবিবর রহমান (৫৫) ও বুলু আহম্মেদ (৩২) আহত হন। এ ছাড়া আমজাদ ছাড়া তাঁর পক্ষের মজনুর রহমান (৩৮), ফজলুর রহমান (৩০), নজরুল ইসলাম (২৬), আমজাদের মা আনোয়ারা (৬৫), স্ত্রী ফাইমা বিবি (৩০) ও মেয়ে লাকি আক্তার রিপা (১৮) আহত হন। পরে আমজাদকে উদ্ধার করে গুরুতর আহতাবস্থায় প্রথমে আদমদিঘী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত গ্রামবাসী মোজাফফরের বাড়িসহ প্রতিপক্ষের কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) কানাই লাল সরকার পুলিশ বাহিনীসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। একই সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. ইসরাফিল আলম ঘটনাস্থলে যান।
ঘটনার পর থেকে মোজাফফর ও তাঁর সঙ্গীরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেলেও পুলিশ হবিবর রহমান, বুলু আহম্মেদকে চিকিৎসাধীন বস্থায় এবং ইনামুল হক (৪০) ও শফিকুল ইসলামকে (২২) গ্রাম থেকে আটক করে।
সংসদ সদস্য মো. ইসরাফিল আলম সাংবাদিকদের জানান, এ মুহূর্তে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সোমবার বিকেলে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। নিহত আমজাদ হোসেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন বলেও জানান ইসরাফিল আলম।
এদিকে, নিহতের স্ত্রী ফাহিমা বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।