চাঁবিপ্রবিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগনেতার নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক-সমালোচনা

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা হয়েও মাহবুবুর রহমান বাবু চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চাঁবিপ্রবি) সিনিয়র ক্যাটালগার পদে রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত বছরের ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ১৩ আগস্ট অস্থায়ীভাবে ছয় মাসের জন্য নিয়োগ পাওয়া এ কর্মকর্তার মেয়াদ আরেক দফায় বাড়ানো হয়। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। তবে অভিযোগ তদন্ত করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. পেয়ার আহমেদ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা মাহবুবুর রহমান বাবুর নিয়োগকে কেন্দ্র করে জেলাজুড়ে সর্বত্র বইছে সমালোচনার ঝড়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু করে সর্বত্রই প্রশ্ন; একজন পদধারী নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগনেতা কীভাবে এখনও এই পদে বহাল রয়েছেন?
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাহবুবুর রহমান বাবু নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের চাঁদপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনে ছাত্রলীগের হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তিনি হাজীগঞ্জ উপজেলার জামায়াতের এক নেতার আত্মীয় হওয়ায় দলটির জেলা পর্যায়ের একজন নেতা তার নিয়োগ বহাল রাখতে সুপারিশ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
একই পদে আবেদনকারী চাকরিপ্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা হয়েও সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূতভাবে শুধু জামায়াতনেতার আত্মীয় পরিচয়ে এবং সুপারিশে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিতে নিয়োগ পেয়েছে। আমরা যারা চাকরিপ্রার্থী রয়েছি, আমাদের কারও পক্ষে বিএনপি-জামায়াতের আত্মীয়তার পরিচয় এবং সুপারিশ না থাকায় বিবেচনায় আসতে পারিনি। অবিলম্বে এই চিহ্নিত ছাত্রলীগনেতার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
এদিকে, মাহবুবুর রহমান বাবু তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করছেন। তিনি বলেন, ‘কেউ আপনাদের ভুল তথ্য দিচ্ছে।’ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের পদে থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার ব্যাকগ্রাউন্ড মাদ্রাসার। এই ব্যাকগ্রাউন্ডে বিগত ১৫ বছরে কেউ চাকরি পেয়েছে কিনা তা আপনার কাছে প্রশ্ন রাখছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি তথ্য সত্য নয়। চাকরির জন্য অনেকেই তো বিভিন্ন পদ ব্যবহার করেন এবং ছবি তোলেন।’
এ বিষয়ে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. পেয়ার আহমেদ বলেন, ‘মূলত তার নিয়োগ হয় সাবেক ভিসির সময়ে (ছয় মাসের জন্য)। বর্তমানে সে কর্মরত রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার যে অভিযোগ রয়েছে, প্রাথমিকভাবে আমরা তার সত্যতা পাইনি। এখন আবার আমাদের কাছে তার কিছু তথ্য ও ছবি এসেছে, সেগুলো তদন্ত করে দেখা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এখনও সিন্ডিকেট গঠন হয়নি, সিন্ডিকেট গঠন হলে তার বিষয়ে পর্যালোচনা করা হবে এবং এর সত্যতা নিশ্চিত হলে সিন্ডিকেট যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’