ঈদগায় এসে সংঘর্ষে জড়াল আ. লীগের সশস্ত্র দুই পক্ষ

পূর্বশত্রুতার জের ধরে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার একটি ঈদগাহে নামাজ পড়তে এসে সংঘর্ষে জড়াল আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ চারটি ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। আটক করা হয়েছে ছয়জনকে।
আজ শনিবার সকালে উপজেলার হাপানিয়া গ্রামে ঈদগাহ মাঠে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম হোসেন।
ওসি বলেন, স্থানীয় মসজিদ ও মাদ্রাসার মালিকানাধীন ছয় বিঘা জমির একটি বাগান নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ চলে আসছিল। যা এর আগে নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়।
‘ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ববিরোধের জের ধরে এই সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ চারটি শটগানের গুলি ছুড়েছে। সন্দেহভাজন ছয়জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এলাকায় অভিাযান অব্যাহত রয়েছে’, বলেন ওসি।
স্থানীয়রা জানান, আলমডাঙ্গা উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ইনতাজুল হকের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তাঁরা এ ঘটনার জন্য একে অপরকে দোষারোপ করেছেন।
পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মাঠে আসার আগেই দুই পক্ষের লোকজন আশপাশের বিভিন্ন বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র জড়ো করে রাখে। দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার একপর্যায়ে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে দুই পক্ষই সংঘর্ষে জড়ায় বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
আহতদের চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল, আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে জয়নাল আবেদীন নামে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ছাড়া আজিজুল হক ও মতিয়ার রহমান নামে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ ঘটনার পর জাতীয় সংসদের হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার সদর হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান এবং চিকিৎসা বিষয়ে খোঁজখবর নেন। এ সময় হুইপ বলেন, ‘যেসব দুষ্কৃতকারী গুলি ছুড়ে, বোমা মেরে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করেছে, তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।’
ইউপি সদস্য ইনতাজুল হক বলেন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান দেলোয়ারের ভাই মহিবুল হোসেন মন্টুর নেতৃত্বে প্রথমে হামলা চালানো হয়। এ সময় তাঁর অনুসারী আবদুল ওহাব, রফিকুল, আবু তাহের, লিটন, কালু, সরোয়ার ও রানা আহত হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গ্রামবাসী সংগঠিতভাবে হামলাকারীদের ধাওয়া ও মারধর করে।
অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিরোধী পক্ষই পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে। আমার সমর্থকরা সবাই আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী।’
হাসপাতাল সূত্রে আহতদের মধ্যে জয়নাল আবেদীন, মতিয়ার রহমান, ওসমান গনি, শহিদুল ইসলাম, সেলিম রেজা, মিলন আলী, হাসান আলী, আজিরুল, গফুর, আশরাফ আলী, কাইয়ুম আলী, মকলেছ আলী, ফিরোজ, সুইট, সেলিম, আফজাল প্রমুখের নাম জানা গেছে।