রোহিঙ্গাদের ত্রাণের নামে মহাসড়ক অচল করেছেন খালেদা জিয়া

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের নামে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সাত দিন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অচল করে রেখেছিলেন।
আজ রোববার সকালে কক্সবাজারের একটি হোটেলে রোহিঙ্গাদের জন্য কিছু সংগঠনের পক্ষ থেকে সোলার প্যানেলসহ বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী গ্রহণকালে ওবায়দুল এ মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়া রোহিঙ্গাদের ত্রাণের নামে সাত দিনের জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অচল করে রেখেছেন। এর পরও সরকারের পক্ষ থেকে কিছুই বলা হয়নি। কারণ, দেরিতে হলেও অন্তত তিনি রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে সারা দুনিয়ার মানুষ প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করলেও খালেদা জিয়া একটি ধন্যবাদও দেননি।
মন্ত্রী আরো বলেন, রোহিঙ্গা সংকটে খালেদা জিয়া সরকারের পাশে থাকেননি, তাঁর দলও পাশে থাকেনি। খালেদা জিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে এক-দুদিন থেকে ফটোসেশন করে চলে গেছেন।
ওবায়দুল বলেন, সারা দুনিয়া রোহিঙ্গা সংকটে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, তুরস্ক, সৌদি আরব, ইরান ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) একবাক্যে বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। কিন্তু বিএনপির কাছে এসব কিছুই নয়।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধনের চিত্র ১৯৭১ সালের গণহত্যাকেও হার মানায় উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘এটা জেনোসাইড (গণহত্যা)। এটা জাতিগত নিধন। এ ঘটনার জন্য দায়ী মিয়ানমার সরকার।’
‘রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য জাতিসংঘ কাজ করছে। জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল দুদেশেই কাজ করছে। আশা করা হচ্ছে, যত দ্রুত সম্ভব মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে জাতিসংঘ তাদের ফিরিয়ে নেবে।’
অনুষ্ঠানে আল্লামা ফজলুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবু রেজা চৌধুরী নদভীর পক্ষ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার সোলার বাতি, সাতকানিয়া সমিতির পক্ষ থেকে ৫০ ইউনিটের সোলার প্যানেল ও চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের পক্ষ থেকে তিন লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।
আজকের অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম, ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায়সহ দলের কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা।
গত সপ্তাহের শনিবার চার দিনের সফরে ঢাকা থেকে কক্সবাজার রওনা দেন খালেদা জিয়া। বিকেলে ফেনী শহরের কাছে মোহাম্মদ আল বাজার পার হওয়ার সময় একদল মানুষ গাড়িবহরের ওপর হামলা চালায়।
এ সময় ওই ব্যক্তিরা খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের সঙ্গে থাকা বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আই, ডিবিসি, একাত্তর ও বৈশাখী টেলিভিশনের গাড়িসহ বেশ কিছু যানবাহনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে থাকা এনটিভির গাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার জন্য বিএনপি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দায়ী করে। অন্যদিকে সরকারি দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরেই এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে দুই পক্ষই সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অভিযোগ জানিয়েছে।