সুন্দরবনে আবার বেড়েছে দস্যু বাহিনীর তৎপরতা

সুন্দরবনে আবার বনদস্যুদের উৎপাত বেড়ে গেছে। প্রায় তিন মাস ধরে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই শরণখোলা রেঞ্জে নতুন করে গঠিত বেশ কয়েকটি বনদস্যু বাহিনী মুক্তিপণের দাবিতে নিরীহ জেলেদের জিম্মি করে চাঁদা আদায়, নির্যাতন ও লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে।
গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি দস্যু বাহিনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করায় সুন্দরবনে বেশ কিছুদিন দস্যুবৃত্তি বন্ধ থাকার পর আবার দস্যুরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বনদস্যুরা নতুন নতুন নামে বাহিনী গঠন করে একের পর এক জেলেদের অপহরণ করে লাখ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করছে। নবগঠিত এ বাহিনীগুলোর মধ্যে সুমন বাহিনী, বড় ভাই বাহিনী, ওহিদ বড়মিয়া বাহিনী, মোশারেফ বাহিনী ও ছোট্ট বাহিনীর নাম জানা গেছে।
শরণখোলার উত্তর রাজাপুর এলাকার ইউপি সদস্য জাকির হোসেনসহ বেশ কয়েকজন মৎস্য ব্যবসায়ী জানান, গত ২২ ডিসেম্বর বনদস্যু ছোট্ট বাহিনী চাঁদপাই রেঞ্জের কাতলার খাল, তাম্বলবুনিয়া ও লেমুয়ার খাল এলাকা থেকে ১৫ জন জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে স্বপন হাওলাদার (২৮) নামের এক জেলে ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে চারদিন পর সোমবার বিকেলে ফিরে এসেছেন। তিনি বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রতিয়া রাজাপুর গ্রামের সুলতান হাওলাদারের ছেলে। ওই জেলে উত্তর রাজাপুর এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী আবদুল মালেক আকনের জেলে হিসেবে বনে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। দস্যুরা মুক্তিপণের টাকা পাওয়ার পর সোমবার সকাল ১০টার দিকে ওই জেলেকে মোংলার বৈদ্যমারী এলাকায় ছেড়ে দিয়ে যায়। অপহৃত বাকি জেলেদের মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করেছে দস্যুরা।
অপহৃত জেলেদের মধ্যে শরণখোলা উপজেলার উত্তর রাজাপুর গ্রামের জেলে লতিফ মীর (৪৫), রিয়াদুল গাজী (১৮), রুহুল আমীন ফরাজী (২৮), হোসেন আলী (২২), পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের ছালাম হাওলাদার (৫০) এবং রতিয়া রাজাপুর গ্রামের স্বপন হাওলাদারের (২৮) নাম জানা গেছে। এদের মধ্যে স্বপন মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে এসেছে। জিম্মি জেলেদের মারধর করা হচ্ছে বলে অপহৃতদের পরিবার ও মহাজনরা জানিয়েছেন।
জিম্মি রুহুল আমীনের স্ত্রী রহিমা বেগম ও ছালামের ছেলে ডালিম হোসেন জানান, দস্যুরা মোবাইল ফোনে মারধরের চিৎকার শুনিয়ে দ্রুত মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ করে তাদের ছাড়িয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের (মোংলা) অপারেশন অফিসার লেফটেন্যান্ট আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, জেলেদের উদ্ধার ও তাদের নিরাপত্তায় কোস্টগার্ডের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।