সাংবাদিককে অপহরণ চেষ্টা, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর নামে মামলা

দেশ টিভি ও দৈনিক করতোয়ার জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি মোস্তাকিম ফাররোখকে অপহরণ চেষ্টার অভিযোগে জেলা ছাত্রলীগের ১২ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় সাংবাদিক মোস্তাকিম ফাররোখ বাদী হয়ে জয়পুরহাট সদর থানায় এ মামলা করেন।
এর আগে অপহরণ চেষ্টার ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার জয়পুরহাট প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের জরুরি সভা বসে। সেখানে ছাত্রলীগের সব সংবাদ বর্জন এবং দোষী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জয়পুরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন মামলা রেকর্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে শুক্রবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
মামলার আসামিরা হলেন জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফিজু ও আলমগীর, সদস্য অপু, জয়পুরহাট সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সদস্য মিলন, কলেজের জুবিলি হল শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আবু তাহের, যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব, পৌর ছাত্রলীগ নতুনহাট শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর, সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগকর্মী আবদুল মোমিন। এ ছাড়া আরো তিন-চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার রাত ৮টায় পেশাগত কাজে ক্যামেরা ও ল্যাপটপ নিয়ে শহরের বৈরাগীর মোড় এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিক মোস্তাকিম ফাররোখ দেখেন, ছাত্রলীগের ওই নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে চিৎকার করে গালিগালাজ করছিলেন। এ সময় ওই সাংবাদিকের বাড়িতে স্ত্রী, মেয়ে ও আত্মীয়স্বজন থাকায় তাঁদের গালিগালাজ বন্ধ করে স্থান ত্যাগ করার অনুরোধ জানান। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ল্যাপটপ ও ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া এবং তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ ছাড়া ছাত্রলীগের ওই বিক্ষুব্ধ নেতারা তাঁর ঘরবাড়ি ভাঙচুরের হুমকি-ধমকি দেন। এ সময় মোস্তাকিমের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যান।
জয়পুরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল জানান, মোস্তাকিম ফাররোখের ওপর হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের এক জরুরি সভা থেকে ছাত্রলীগের সব সংবাদ বর্জন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক মোস্তাকিম ফাররোখ জানান, এ বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজন নেতাকে জানালে তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অপহরণ চেষ্টার প্রমাণ পান। পরে তিনি ছাত্রলীগের ওই সব নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।