এসিড খাইয়ে শিশুকে হত্যার চেষ্টা, চাচির মৃত্যুদণ্ড
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/08/16/photo-1439744874.jpg)
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় এসিড খাইয়ে এক শিশুকে হত্যার চেষ্টায় মামলায় চাচিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন। আজ রোববার যশোরের অতিরিক্ত দায়রা জজ (চতুর্থ আদালত) ও অ্যাসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. শরীফ হোসেন হায়দার আসামির অনুপস্থিতিতে এ রায় দেন।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত রীনা রানী তরফদার উপজেলার আজমেহেরপুরে গ্রামের পরিতোষ কুমার তরফদারের স্ত্রী।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (এপিপি) আবু সেলিম রানা রায়ের সত্যতা এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমরা যথাযথ সময়ে সাক্ষীদের আদালতে হাজির করে সাক্ষ্য প্রদান করতে সক্ষম হয়েছি। আদালত সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অপরাধীর উপযুক্ত সাজা দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ১১ জানুয়ারি সকালে দুর্জয়ের (এক মাস ১৯ দিন) মা তাকে পোলিও টিকা খাওয়াতে নিয়ে যান। দুপুরে বাড়ি ফিরে দুর্জয় কান্নাকাটি করায় রান্না করতে অসুবিধা হচ্ছিল মা ইতি রাণীর। এ সময় দুর্জয়ের চাচি রীনা রানী তাকে কোলে নিয়ে ঘরে যান। কিছু সময় পর দুর্জয় চিৎকার করে কান্না শুরু করলে ইতি রানী গিয়ে দেখেন দুর্জয়ের গায়ের সোয়েটার দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে এবং ঠোঁট, গাল ও গলা ঝলসে গেছে। এ অবস্থার কারণ জানতে চাইলে রীনা রানী কিছু না বলে শিশুটিকে কোলে দিয়ে চলে যান।
এরপর শিশু দুর্জয়কে প্রথমে বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তখন চিকিৎসকরা জানান, শিশুটিকে অ্যাসিডে খাওয়ানো হয়েছে। এরপর তাঁকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সেখানে ২৯ দিন চিকিৎসা শেষে দুর্জয়কে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, অ্যাসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন পরিচালিত জীবনতারা হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য হংকং নিয়ে যাওয়া হয়।
দেশে ফিরে ২০০৭ সালের ৭ মে বাঘারপাড়া থানায় দুর্জয়ের মা ইতি রানী তরফদার বাদী হয়ে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনে মামলা করেন। আসামি করা হয় দুর্জয়ের চাচি রীনা রাণীকে। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটানো হয়।
তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৩ জুলাই রিনা রানীকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আফছার আলী দেওয়ান।
আইনজীবী আবু সেলিম রানা আরো জানান, শিশুটির উন্নত চিকিৎসার জন্য বিশেষ করে তার জিহ্বা প্রতিস্থাপনে একটি সংস্থা তাঁকে জার্মানি নিয়ে যাবে।