রিমান্ড শেষে তিন আইনজীবীর জবানবন্দি

জঙ্গিদের অর্থসহায়তার অভিযোগে গ্রেপ্তার সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী দ্বিতীয় দফায় রিমান্ড শেষে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ বুধবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা, অ্যাডভোকেট মাহফুজ চৌধুরী বাপন ও অ্যাডভোকেট হাসানুজ্জামান লিটন।
তবে আদালতে আইনজীবীরা জঙ্গি সম্পৃক্ততার ব্যাপারে কী জবানবন্দি দিয়েছেন তা নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন।
পরে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা হাটহাজারী বিচারিক হাকিম আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে আসামিদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে গত ১৮ আগস্ট তিন আইনজীবীকে ঢাকার ধানমণ্ডি থেকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বুধবার সকাল ৯টায় আসামিদের র্যাব হেফাজত থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম আদালত ভবনে আনা হয় তিন আইনজীবীকে। দুপুর ১টার পর অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. শহীদুল ইসলামের আদালতে তিন আইনজীবী ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দির ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আবুল হাশেম সাংবাদিকদের বলেন, ‘টাকা লেনদেনের বিষয়টি আসামি স্বীকার করেছেন। টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি বিশ্বাস করা খুবই কঠিন এ মুহূর্তে। যেহেতু তিনি আসামি হয়ে গেছেন। আমি যে পর্যন্ত মামলা পরিচালনা করেছি তাতে টাকা ফেরত দেওয়ার সত্যতা পাওয়া যায় না।’
অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুস সাত্তার বলেন, ‘ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা নিজেকে জঙ্গি-সম্পৃক্ত করে আদালতে কোনো বক্তব্য দেননি। উনি যে কাজটি করেছেন, তা আইনজীবী হিসেবে করেছেন। জঙ্গি বা অপরাধীর পক্ষে কোনো মামলা পরিচালনা করা যাবে না বাংলাদেশে এমন কোনো আইন নেই। যে কোনো অপরাধীর পক্ষে মামলায় লড়া একজন আইনজীবীর সাংবিধানিক অধিকার। তবে তিনি (ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা) নিজে কোনো অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না।’
এর আগে গত ২১ ফেব্রুয়ারি বাঁশখালীর দুর্গম লটমনি পাহাড়ে শহীদ হামজা ব্রিগেডের আস্তানা থেকে আটককৃতদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গত ১৮ আগস্ট তিন আইনজীবীকে ঢাকার ধানমণ্ডি থেকে আটক করে র্যাব। ওই মামলায় চারদিনের রিমান্ড শেষে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করে গত ২৩ আগস্ট (রোববার) আসামিদের জেলহাজতে পাঠান বাঁশখালী আদালত।
পরে অপর এক মামলায় গত ২৪ আগস্ট (সোমবার) আসামিদের চট্টগ্রামের হাটহাজারী বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করা হয়। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি হাটহাজারী উপজেলায় আল মাদ্রাসাতুল আবু বকর থেকে শহীদ হামজা ব্রিগেডের ১২ সদস্য গ্রেপ্তার হয়। ওই মামলায় তিন আইনজীবীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।