শিবিরকর্মী সন্দেহে তিন শিক্ষার্থীকে পেটাল ছাত্রলীগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) জিয়াউর রহমান হলে শিবিরকর্মী সন্দেহে তিন শিক্ষার্থীকে পিটিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় দুটি কক্ষে ভাঙচুরও করে তারা।
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে শিবির করার অভিযোগে দুই শিক্ষার্থীকে পুলিশে দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এর পর জিয়াউর রহমান হলে তল্লাশি চালিয়ে জিহাদি বই ও নথি উদ্ধার এবং এক শিক্ষার্থীকে আটকের দাবি করে পুলিশ।
শিবিরের অভিযোগে আটক শিক্ষার্থীরা হলেন অর্থনীতি বিভাগের তানজির আহমদ, পরিসংখ্যান বিভাগের আপন ও আরবি বিভাগের এনায়েত। তাঁরা সবাই তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
জিয়াউর রহমান হলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, ওই হলের শিবির নেতা আবদুস সালাম হলের ২২৬ নম্বর কক্ষে কর্মীদের নিয়ে জড়ো হয়েছেন—এমন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে রাবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতিকুর রহমান, গণযোগাযোগবিষয়ক সম্পাদক আজহারুল ইসলাম শাওন, ওই হলের ছাত্রলীগকর্মী ইমাম মেহেদীসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী সেখানে যান। এ সময় শিবির নেতা সালাম পালিয়ে যান।
পরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শিবিরকর্মীদের ধরতে হলের বিভিন্ন কক্ষে খোঁজ করে। তারা হলের ২২৪, ২২৬ ও ২০১ নম্বর কক্ষ থেকে শিবির সন্দেহে তানজির, আপন ও আশিককে ধরে মারধর করে। একপর্যায়ে আশিক ছাত্রলীগের কাছ থেকে পালিয়ে যায়। হলের ৪১৯ নম্বর কক্ষে শিবিরের জিহাদি বই ও নথি পাওয়া যায়।
একপর্যায়ে শিবির নিয়ন্ত্রিত ৪১৯ ও ৪২৯ নম্বর কক্ষে ভাঙচুর করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ এলে তানজির ও আপনকে পুলিশে সোপর্দ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে হলে তল্লাশি চালায় পুলিশ। এ সময় শিবির অভিযোগে এনায়েতকে আটক করে পুলিশ।
ছাত্রলীগ নেতা আতিকুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘শিবির নেতা সালাম ফোনে হলের কর্মীদের মারধরের হুমকি দিয়েছে। তাই তাকে ধরতে ২২৬ নম্বর কক্ষে গিয়েছিলাম। এ সময় শিবিরকর্মীরা হলের সব বারান্দার লাইট বন্ধ করে আমাদের ওপর হামলার চেষ্টা করে। আমাদের কর্মী নাহিদকে রড দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। আমরা দুই শিবিরকর্মীকে পুলিশে দিয়েছি।’
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) অশোক চৌহান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘হলে শিবির ও ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। একটি কক্ষে সামান্য ভাঙচুর হয়েছে। আমরা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছি। তিন শিবিরকর্মীকে আটক ও শিবিরের কিছু বই উদ্ধার করা হয়েছে। আটকদের থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক অনিল চন্দ্র দেব বলেন, ‘কিছু শিক্ষার্থীর মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। এখন হলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’