ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের মুখে পিছু হটলেন ভ্রাম্যমাণ আদালত

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে হয়রানি করার অভিযোগ তুলে আজ শনিবার দোকানপাট বন্ধ করে বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা। ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভের মুখে ভ্রাম্যমাণ আদালত বন্ধ করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইউএনও তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তাহেরপুর বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় তিনি সাতটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে ১২ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা করেন। এর মধ্যে সাইকেল মেকার জালাল উদ্দিনের কাছ থেকে ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করেন রাস্তার পাশে দোকান দেওয়ার জন্য। এ ছাড়াও আবদুল গফুরের মিষ্টির দোকানকে পাঁচ হাজার টাকা, আবদুর রাজ্জাকের পান-সিগারেটের দোকানকে এক হাজার, অনিল কুমারের ফলের দোকানকে তিন হাজার, খলিলের ফুটপাতের কাপড়ের দোকানকে ৫০০ টাকাসহ আরো কয়েকটি দোকানকে জরিমানা করেন তিনি।
এভাবে বাজারে একের পর এক জরিমানা করায় অন্য ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো মুহূর্তের মধ্যে বন্ধ করে দিয়ে ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁরা বাজারের পেঁয়াজহাটা থেকে মিছিল বের করে হরিতলা মোড়ে দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ঘিরে ফেলেন।
ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের মুখে ইউএনও অভিযান বন্ধ করে সেখান থেকে চলে যান। ব্যবসায়ীরা বাজারে দ্বিতীয় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে হয়রানি করা হচ্ছে অভিযোগ করে স্লোগান দেন।
তাহেরপুর বাজারের ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান জানান, ঈদের আগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হচ্ছিল। ব্যবসায়ীদের কোনো কথা না শুনে গণহারে জরিমানা আদায় শুরু করলে ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ জানান। একপর্যায়ে ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ করেন।
তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইউএনও বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে গণহারে জরিমানা আদায় শুরু করলে ব্যবসায়ীরা প্রতিহত করেছেন। তাঁদের বিক্ষোভের মুখে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়ে চলে যান তিনি।
তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইউএনও তরিকুল ইসলাম জানান, বিধি মোতাবেক তাহেরপুর বাজারের ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের মুখে কার্যক্রম বন্ধ করে চলে যাননি বলে দাবি করেন তিনি।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, খবর পেয়ে তিনি পুলিশ নিয়ে তাহেরপুর বাজারে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। ইউএনও চলে যাওয়ার পর স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান খোলেন বলে জানান তিনি।