বরগুনায় জাপার সম্মেলনে দুইপক্ষের সংঘর্ষ

বরগুনায় জেলা জাতীয় পার্টির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুইপক্ষের অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। আজ শনিবার দুপুরে স্থানীয় বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সে জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, আজ জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হানিফ মাতুব্বরকে সভাপতি ও মাইনুল হাসান রাসেলকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ সময় বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মকবুল হোসেন হাওলাদারের সমর্থকরা প্রতিবাদ করেন। ফলে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। আহত হয় দুইপক্ষের ১১ জন।
সম্মেলনের সভাপতি ও বরগুনা জেলা জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মকবুল হোসেন হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, ‘সম্পূর্ণ অসাংগঠনিকভাবে কেন্দ্রীয় মহাসচিবের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সম্মেলন করা হয়েছে। এত কম সময়ের মধ্যে সম্মেলন করা হয়েছে যে উপজেলা পর্যায়ের অধিকাংশ নেতাকর্মীরা অংশ নিতে পারেননি। যারা এক সময় দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তাদেরকেই আবার দলের নেতৃত্বে আনা হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীরা কমিটি ঘোষণায় ক্ষুব্ধ হলে হাতাহাতির একপর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।’
মকবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, বরগুনার ছয়টি উপজেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ উল্লেখযোগ্য কোনো জ্যেষ্ঠ নেতা এ সম্মেলনে উপস্থিত হননি। জাতীয় পার্টির বাইরের লোকজন নিয়ে সম্মেলন করা হয়েছে।
মকবুল অভিযোগ করেন, ‘যাকে সভাপতি করা হয়েছে তিনি দলের সদস্যও না। তাঁকে কিভাবে গঠনতন্ত্র বহির্ভূত সভাপতি করা হলো সেটা আমার বোধগম্য নয়। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে অনুরোধ থাকবে বরগুনায় জাতীয় পার্টির এই বিরোধ নিষ্পত্তি করুন।’
জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শাহজাহান মনসুর বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার ২ অক্টোবর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ৬ অক্টোবর জেলা সম্মেলন করার নির্দেশ দেন। কী কারণে তিনি এত স্বল্প সময়ের নোটিশে সম্মেলনের নির্দেশ দিয়েছেন তা আমার বোধগম্য নয়। আমি অসুস্থতার কারণে ঢাকায় চিকিৎসাধীন আছি। তবে জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র অনুসারে এভাবে সম্মেলন হতে পারে না। আমাদের চেয়ারম্যান হুসাইন মুহম্মদ এরশাদ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
পাথরঘাটা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মল্লিক আজাদ বলেন, ‘আমরা এ ধরনের সম্মেলন মানি না । তাই কোনো ডেলিগেট বা প্রতিনিধিরা সম্মেলনে যাইনি।’
জেলা জাতীয় পার্টির প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মকবুল হোসেন হাওলাদারের সভাপতিত্বে এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের যুব বিষয়ক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূইয়া।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজাউল ইসলাম ভূইয়া বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশে সম্পূর্ণ সাংগঠনিকভাবে সম্মেলন করা হয়েছে।’
মহাসচিব স্বাক্ষরিত যে চিঠির বলে সম্মেলন করা হয়েছে তাতে কোন স্মারক নম্বর উল্লেখ নেই কেন জানতে চাইলে রেজাউল বলেন, ‘এখানে কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত হয়েছে এটাই তো বড় কথা। চিঠিতে হয়তো ভুলবশত স্মারক পড়েনি। ’
সংঘর্ষের বিষয়ে রেজাউল ইসলাম ভূইয়া বলেন, ‘আমরা কমিটি ঘোষণা করে চলে আসার পরে একটা গণ্ডগোল হয়েছে শুনেছি। এ বিষয়ে যদি জাতীয় পার্টির কেউ জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক, সাংগঠনিক সম্পাদক ফকরুল আহসান শাহজাদা প্রমুখ।