আমি মুক্তি চাই শেখ হাসিনার : কাদের সিদ্দিকী
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে বন্দি করার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে বন্দি করা হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বন্দি রাখতে পারবে না।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভায় বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী এ কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই না। আমি মুক্তি চাই শেখ হাসিনার। তার কখন মুক্তি হবে? সে জনগণের সাথে যা করেছে তার থেকে কীভাবে মুক্তি পাবে তারা? খালেদা জিয়া কারাগারে গিয়ে তিনি গণতন্ত্রের প্রতীক হয়েছেন। তাই তার মুক্তি আমি হাসিনার কাছে চাই না।’
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বলেন, ‘আমি কিন্তু বিএনপিতে যোগদান করি নাই। আমি ড. কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘আপনারা যদি আগামী দিনে জিততে চান তাহলে নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপি ভুলে যান। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পতাকা তলে আসুন।’
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আপনারা একটু মির্জা ফখরুলকে মান্য করুন, ড. কামাল হোসেনকে মান্য করুন। তাদের নির্দেশে আন্দোলনের জন্য ঐক্যবদ্ধ হন।’
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জনসভায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বলেন, ‘আপনারা একটু কম লাফান। আপনারা এত দিন শুধু লাফালাফি করেছেন। সেজন্য হাসিনা আপনাদের অনেক বিপদে ফেলেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের পুলিশ দৌঁড়াচ্ছে। দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে এক সময় পুলিশ হয়রান হয়ে যাবে। আপনারা দৌঁড়ান, সরকার ভোটচুরি করতে পারবে না। জয় পরাজয় দুটোই আপনাদের হাতেই। আপনারা চিন্তা করেন কোনটা গ্রহণ করবেন?’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রসঙ্গে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের একটা চাড়াল। চাড়ালের কথার মূল্য আছে, কিন্তু ওবায়দুল কাদেরের কথার কোনো মূল্য নেই।’
বঙ্গবীর বলেন, ‘বিএনপির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের অভিযোগ, বিএনপি রাজাকারের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছে। কিন্তু এ কথা সত্য নয়। আওয়ামী লীগ প্রথমে নূরু রাজাকারের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছে। রাজাকার মহিউদ্দিনের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছে।’
সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তিসহ সাত দফা দাবিতে ওই জনসভার আয়োজন করা হয়।
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সঞ্চালনা করেন প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরীর এ্যানী। জনসভার প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। প্রধান বক্তা ছিলেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব। এছাড়া নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মুনসুর আহমেদ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মোহসীন মন্টু, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন, সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, জয়নুল আবদীন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, ড. সুকোমল বড়ুয়া, আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, এমরান সালেহ প্রিন্স ও শামা ওবায়েদ সভায় উপস্থিত ছিলেন।