যুবলীগ কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

খুলনায় যুবলীগ কার্যালয় ও ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি বাসভবনে হামলা ঘটনায় ১৯ জন যুবলীগ নেতা কর্মীর নামে সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ওই মামলার তিন আসামিকে গতকাল বৃহস্পতিবার মহানগর যুবলীগ সভাপতি আনিসুর রহমান পপলুর বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ওই ঘটনায় এলাকায় দলীয় নেতা কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
খুলনা মহানগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ কার্যালয় ও ওয়ার্ড সভাপতি শওকত আলীর বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় দুজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমতাজুল হক জানান, বৃহস্পতিবার ঘটনায় সরফরাজ মিয়া বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৩০/৪০ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলার আসামি হিসাবে বৃহস্পতিবার রাতেই মহানগর যুবলীগ সভাপতি আনিসুর রহমান পপলুর বাসভবন থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন, সোনাডাঙ্গা থানা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শেখ শহীদ আলী, শেখপাড়া মেইনরোড এলাকার ওয়ার্ড যুবলীগের সদস্য সিরাজুল ইসলাম সুজন ও সোলায়মান নগর ২য় গলির বাসিন্দা সুমন সূত্রধর।
আজ শুক্রবার বিকালে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়। মহানগর হাকিম মো. শহিদুল ইসলাম তাঁদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর জেল হাজতের পাঠানোর আদেশ দেন। আদালত এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে হামলার মুহূর্তের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ এবং আগামী সোমবার আদালতে শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী থেকে জানা যায়, গত ৩ জানুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে শের-ই-বাংলা রোডের আমতলা মোড় এলাকায় ওয়ার্ড যুবলীগের একটি কার্যালয়ে অভিযুক্তরা হামলা চালায়। এ সময় তাঁরা ওই কার্যালয়ের ভেতরে চেয়ার, টেবিলসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ছবি নষ্ট করে। পুলিশ ওই ঘটনায় সিসি ক্যামেরায় ধারণ হওয়া ভিডিও রেকর্ড সংগ্রহ করেছেন বলে আদালতকে জানান।
মামলায় আরও বলা হয়, আসামিরা বিভিন্ন দেশি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে যুবলীগ কার্যালয় চেয়ার টেবিল ভাঙচুর ও ওয়ার্ড সভাপতির বাসভবন হামলা ও ভাঙচুর করে। তাঁরা অফিসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক সহ নেতাদের ছবি রাম দা কুপিয়ে নষ্ট করে দেয়। এই সময় তারা নেতৃবৃন্দের নামে অশালীন বক্তব্য ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এই ঘটনায় বাহদুর ও রুবেল হাওলাদার রামদার কোপে আহত হন।
মহানগর যুবলীগের সভাপতি সরদার আনিসুর রহমান পপলু বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কোন যুবলীগের কর্মী নিজ দলীয় কার্যালয়ে হামলা করতে পারেনা। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা অনুপ্রবেশকারী। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পুলিশ সংগ্রহ করেছে, অতএব হামলাকারীরা সনাক্ত হবে।’ এ নিয়ে একটি পক্ষ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে বলেও তিনি জানান।
এদিকে ২৬ নং ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি শওকত হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে মহানগর যুবলীগের সভাপতি পপলুর স্ত্রীর গাড়ীর চালক স্থানীয় একজনকে বেদম মারধর করলে স্থানীয়রা প্রতিরোধ করে। এই সময় তিনি যুবলীগ সভাপতির ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। এই সময় কিছু বুঝে উঠার আগেই তাঁর ওপর একদল মারমুখো হয়ে উঠে। তিনি দ্বিতীয় তলায় গিয়ে আশ্রয় নেন। এই সময় তিনি বাসভবন এবং কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা শুনতে পান।
শওকত জানান, গ্রেপ্তার হওয়া শেখ শহীদ আলী কয়েক মাস আগে নিহত সুমন হত্যা মামলা অন্যতম আসামি।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমতাজুল হক জানান, এলাকায় পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে।