বরগুনায় যুবলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা

বরগুনায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে শামীম ইমতিয়াজ বাদশা নামের এক যুবলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের কামরাবাদ বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান শামীম ইমতিয়াজ বাদশা বরগুনা সরকারি কলেজ থেকে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তর শেষ করে সদর উপজেলা যুবলীগের একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তাঁর তিন বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বছর খানেক আগে বাদশার বাবা সোহরাফ হোসেন মৃধাকে মারধর করেন একই গ্রামের ইউনুস গাজীর বখাটে ছেলে আল আমিন ও তাঁর সহযোগীরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র উভয়পক্ষের মধ্যে একাধিকবার হামলা ও পাল্টাহামলার ঘটনা ঘটে।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে কামরাবাদ বাজারে এলাকাবাসীর সঙ্গে চা খাচ্ছিলেন শামীম ইমতিয়াজ বাদশা। সেখানে গিয়ে প্রতিপক্ষের বখাটে সন্ত্রাসী আল আমিন, মহসীন মৃধা, জাকারিয়া, রাজু ও রাব্বীসহ আট-দশজনের একদল সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাদশাকে উপর্যুপরি কুপিয়ে জখম করে। এলাকাবাসী তাঁকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়।
ময়নাতদন্ত শেষে আজ বুধবার দুপুরে বরগুনার আবুল হোসেন ঈদগাহ মাঠে নিহতের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে এবং দ্রুত বিচারের দাবিতে শহরের প্রধান প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জেলা যুবলীগ। বিক্ষোভ শেষে নিহতের লাশ কামরাবাদ গ্রামের নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়।
নিহত বাদশার বাবা সোহরাফ হোসেন মৃধা পেশায় একজন গভীর নলকূপ স্থাপনের শ্রমিক। মা ফাতেমা বেগম গৃহিণী। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে তাঁরা এখন পাগল প্রায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন যুবলীগ কর্মী জানান, আওয়ামী লীগের একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় বখাটে আল আমিন, মহসীন মৃধা, জাকারিয়া, রাজু ও রাব্বীসহ তাদের সহযোগীরা স্থানীয়ভাবে মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে আসছে।
বরগুনা জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাহাব উদ্দীন সাবু বলেন, শামীম ইমতিয়াজ বাদশা বরগুনা সরকারি কলেজ থেকে লেখাপড়া শেষ করে সদর উপজেলা যুবলীগের একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে কখনই কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ ছিলো না।
সাহাব উদ্দীন বলেন, নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল করেছে বরগুনা জেলা যুবলীগ।
এ বিষয়ে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবীর মোহাম্মদ হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে সচেষ্ট রয়েছে পুলিশ।