সৈকতের আকাশে ঘুড়ির মেলা

সৈকতের আকাশে উড়ছে ঘুড়ি। সাদামাটা ঘুড়ি না। বাঘ, অজগর, হাঙর, ডলফিন, অক্টোপাস, জেলি ফিশসহ আরো নানা প্রাণীর আকৃতির ঘুড়ি। আর দর্শক প্রাণভরে উপভোগ করছে সেই দৃশ্য।
হরেক রঙের বাহারি ঘুড়ি আর নানান আকৃতির দেশি পুতুলের সাজে কক্সবাজারে শুরু হলো 'জাতীয় ঘুড়ি উৎসব-২০১৯’। প্রতিবারের মতো এবারও দুই দিনব্যাপী জাতীয় ঘুড়ি উৎসব আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশন। গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে আকাশে ঘুড়ি উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং ঝু, জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন ও বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মৃধা বেনু।
এবারের ঘুড়ি উৎসবে বিশাল পকেট কাইট, ড্রাগন সিরিজ কাইট, ট্রেন কাইট, গোলাপসহ দেখা গেছে নানা রঙের আকর্ষণীয় বিদেশি ঘুড়ি। ফানুস ওড়ানো, আলোক ঘুড়ি ওড়ানোসহ নানা আয়োজনও আছে। এ ছাড়া ঘুড়ি কাটাকাটি এবং শিশুদের জন্য উন্মুক্ত ঘুড়ি ওড়ানো প্রতিযোগিতার উৎসবে মেতে উঠেছে সমুদ্রসৈকত। পর্যটকদের বাড়তি আনন্দ দিচ্ছে ঘুড়ি উৎসব।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ‘ঘুড়ি ওড়ানো ঐতিহ্যের একটি অংশ। কিন্তু এটি এখন অনেকাংশে হারিয়ে গেছে। এই উৎসবের মাধ্যমে বিশেষ করে শিশুরা মন খুলে আকাশ দেখতে পারে। নির্মল আনন্দ পায়। ঘুড়ি উড়ানো হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। এটি বাঁচিয়ে রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
ঘুড়ি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মৃধা বলেন, ‘বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষণীয় করে তোলার লক্ষ্যে কক্সবাজারে এই উৎসবটি প্রতিবছর আয়োজন করা হয়। এটি পরিবেশবান্ধব একটি পর্যটন ক্রীড়া হিসেবে সারাবছর চালু রাখার জন্য সরকার উদ্যোগ নিতে পারে। কারণ ঘুড়ি উড়িয়ে সব বয়সের মানুষ যে আনন্দ পায়, সেটা অন্য কোনো খেলায় পাওয়া যায় না।’
সৈকতে ঘুড়ি উড়াচ্ছিলেন ঢাকার গ্রিন রোড এলাকার স্কুলছাত্রী ইশরাত ইমরান। ইশরাত বলেন, ‘ঢাকার আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর পরিবেশ নেই। ইচ্ছে করলেও ঘুড়ি ওড়ানো যায় না। তাই চেষ্টা করি পরিবারের সাথে বিশাল এই সমুদ্রসৈকতের আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর জন্য প্রতিবছর চলে আসতে। ঘুড়ি ওড়ানোর মধ্যে যে কী আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’