তদন্তে ত্রুটির কারণেই দাগি আসামিরা খালাস পাচ্ছে
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/10/11/photo-1444583042.jpg)
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, কিছু পুলিশের তদন্তে ত্রুটির কারণেই আসামিরা জামিন বা খালাস পেয়ে যাচ্ছে। যশোরের উদীচীর অনুষ্ঠানে হামলা মামলাতেও ত্রুটি ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এভিডেন্স কালেকশনে সজাগ থাকলে দাগি অপরাধীরা জামিন পেতে পারবে না। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রধান বিচারপতি পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন।
আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় যশোর সার্কিট হাউসে যশোর জেলা জজশিপ আয়োজিত বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন যশোরের জেলা ও দায়রা জজ ইসরাইল হোসেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলদার হোসেন, যশোর জেলা জজশিপের বিচারকবৃন্দ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাবিনা ইয়াসমিন, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি দেবাশীষ রায়, যশোরের পিপি রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রায়ই অভিযোগ পাওয়া যায়, থানায় কেস রেজিস্ট্রেশন করতে অসহযোগিতা করা হয়। কোর্টে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ কেস ফাইল করা হয়। থানায় ঠিকমতো কেস ফাইল করা হলে কোর্টের ওপর চাপ কিছুটা কমানো যায়। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যও তিনি পুলিশ সুপারকে বলেন।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে ত্রুটি সম্পর্কে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ডাক্তাররা লাশঘরে যান না। আমি নিজে ঢাকা মেডিকেল কলেজে গিয়ে দেখেছি, ডোম এসে যা বলেন, ডাক্তাররা তাই রিপোর্ট করেন। তা ছাড়া নির্দিষ্ট ফরমে হিজিবিজি করে রিপোর্ট লেখা হয়, যা বিচারকদের পক্ষে বোঝা কঠিন।’ টাইপ করা সম্ভব না হলে অন্তত বড় হাতের অক্ষরে যেন প্রতিবেদন লেখা হয়, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেন তিনি।
বিচারকাজে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে পুলিশ সুপার ও সিভিল সার্জনের উদ্দেশে সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘আপনাদের সাক্ষীরা কোর্টে আসেন না। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, যশোর-সাতক্ষীরা সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এখানে মাদক, আগ্নেয়াস্ত্র, সোনা পাচারের ঘটনা বেশি হয়। কিন্তু সিজার লিস্টে ত্রুটি থানার কারণে আসামিরা জামিন পেয়ে যান। তিনি বলেন, চোরাচালান আমাদের দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই চোরাকারবারিদের কারণে আমাদের অর্থনীতি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজেও চাচ্ছেন, ঢাকার বাইরে সার্কিট বেঞ্চ পুনস্থাপন করতে। কিন্তু বিচারক সংকট রয়েছে। জানুয়ারিতে কিছু বিচারক নেওয়া হবে। আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করব।’
সুরেন্দ্র প্রধান বিচারপতি স্থানীয় আইনজীবীদের আশ্বস্ত করে বলেন, চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ হলে যশোরেও হবে।