মাদ্রাসাছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টায় সন্দেহভাজন পপি আটক

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় পপি নামের এক সন্দেহভাজন নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
আজ বুধবার সকালে সোনাগাজী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আজ ভোরেই পপিকে আটক করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট ১২ জনকে আটক করা হলো।’
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার জোবায়েরকে নিয়ে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে উল্লেখ করে পরিদর্শক আরো বলেন, ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে।
গত শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত। এ সময় তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করেছে—এক ছাত্রীর এমন সংবাদে ভবনের চারতলায় যান তিনি। সেখানে বোরকা পরা চার-পাঁচ ছাত্রী তাঁকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে আনা শ্লীলতাহানির মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। এতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁর গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
এ ঘটনায় নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান সোমবার রাতে অধ্যক্ষ সিরাজ ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সম্পূরক এজাহার দাখিল করেছেন।
এর আগে নুসরাতের মা বাদী হয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ তাঁকে ২৭ মার্চ গ্রেপ্তার করে। তিনি এ মামলায় কারাগারে রয়েছেন।
শনিবার ঘটনার পর পরই রোববার রাতে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক আফসার উদ্দিন ও আলিম পরীক্ষার্থী আরিফকে আটক করা হয়। তখন এ ঘটনায় মামলা না হওয়ার কারণে পুলিশ দুজনকে পরদিন সোমবার ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠয়। আদালত তাদের জেলহাজাতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সোমবার এ ঘটনায় আরো সাতজনকে আটক করে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার তাদের সবাইকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত এর মধ্যে চারজনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাঁরা হলেন আলাউদ্দিন, কেফায়েত উল্লা, নুর হোসেন ও শহীদুল ইসলাম। বাকি তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মামলার এজাহারে নাম থাকা জোবায়েরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নুসরাত এবার সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা থেকে আলিম (এইচএসসি সমমান) পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তিনি সোনাগাজীর উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের মাওলানা এ কে এম মুসা মানিকের মেয়ে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়।