সিফাতের শাশুড়িও জামিন পেলেন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ওয়াহিদা সিফাত হত্যা মামলায় তাঁর শাশুড়ি নাজমুন নাহার নাজলীও আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন।
রাজশাহী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মনসুর আলম আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে নাজমুন নাহার নাজলীর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। দীর্ঘ আট মাস পলাতক থাকার পর আজ সকালে সিফাতের শাশুড়ি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
এর আগে গত ২১ অক্টোবর একই আদালতে সিফাত হত্যা মামলার আসামি তাঁর শ্বশুর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন রমজান আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন।
আসামির আইনজীবী হামিদুল হক জানান, সকালে রাজশাহী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন নাজমুন নাহার নাজলী। শুনানি শেষে বিচারক মনসুর আলম ১০ হাজার টাকার বন্ডে তাঁর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
গত ২৯ মার্চ সন্ধ্যায় নগরীর মহিষবাথান এলাকার অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন রমজানের বাড়িতে তাঁর পুত্রবধূ ওয়াহিদা সিফাতের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। তাঁর আড়াই বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে।
ঘটনার চারদিন পর সিফাতের চাচা মিজানুর রহমান খন্দকার রাজপাড়া থানায় ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ এনে মামলা করেন। মামলায় সিফাতের স্বামী মোহাম্মদ আসিফ ওরফে পিসলী, শ্বশুর মোহাম্মদ হোসেন রমজান ও শাশুড়ি নাজমুন নাহার নাজলীকে আসামি করা হয়।
প্রথমে রাজপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শরিফুল ইসলাম মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন। রাজপাড়া থানা চাঞ্চল্যকর এই মামলায় তেমন কোনো অগ্রগতি করতে না পারায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে এটি পরে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। সেখানেও মামলার অগ্রগতি না হওয়ায় পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে সম্প্রতি মামলাটি ক্রিমিনাল ইনভেসটিগেশন ডিপার্টমেন্টে (সিআইডি) স্থানান্তর করা হয়।
বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ জুন রাজশাহী মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক জয়ন্ত রাণী দাশ সিফাতের লাশ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের আদেশ দেন। ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়ার পর মেডিকেল বোর্ড নিশ্চিত হয় যে, সিফাতের মাথায় আঘাত করায় রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়।
এদিকে সিফাত হত্যা মামলার পর থেকে দুই আসামি তাঁর শ্বশুর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন রমজান ও শাশুড়ি নাজমুন নাহার পলাতক ছিলেন। এ ছাড়া সিফাতের আড়াই বছর বয়সী একমাত্র ছেলে আইয়ান আল সাদীদকে এখনো উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। সিফাতের স্বামী মোহাম্মদ আসিফ ওরফে পিসলী কারাগারে আটক রয়েছেন।