সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাৎ, খুলনার সহকারী কর কমিশনার গ্রেপ্তার

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া খুলনার সহকারী কর কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদকে সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নগরীর বয়রা সবুরের মোড় এলাকার নিজ বাসার সামনে থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দুদকের খুলনা জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. নাজমুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, চলতি বছরের ২৭ মে খুলনা কর অঞ্চলের উপকর কমিশনার (সদর প্রশাসন) খোন্দকার তারিফ উদ্দীন আহমেদ দুদকের কাছে সহকারী কর কমিশনার মেসবাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেন। বিষয়টি তদন্ত শেষে আজ বুধবার দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শাওন মিয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এরপরই তাঁকে আটক করে দুদক কার্যালয়ে আনা হয়। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে খালিশপুর থানায় হাজাতে রাখা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ ২০১৭ সালের ৮ মে থেকে ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর পর্যন্ত খুলনা কর অঞ্চলের অধীনস্থ কর সার্কেল-১৪ বাগেরহাটে সহকারী কর কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ সময় তিনি করদাতাদের রাজস্ব হিসেবে দাখিল করা মোট ৪০টি পে-অর্ডার, ডিডি ও ক্রস চেক সরকারি কোষাগারের জমা না দিয়ে বাগেরহাট সোনালী ব্যাংক শাখায় জমা দেন। পরবর্তী সময়ে তিনি সেই অ্যাকাউন্ট থেকে নিজের স্বাক্ষরে দুই কোটি ১০ লাখ ২৪ হাজার ৪২৩ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
এ ছাড়া একাধিক চেকের মাধ্যমে বাগেরহাট ব্র্যাক ব্যাংক থেকে চার লাখ ৭০ হাজার টাকা, সার্কেল-১৭ মোংলায় কর্মরত থাকা অবস্থায় সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক থেকে ২৯ লাখ ৯০ হাজার ৯৯৭ টাকা, জনতা ব্যাংক থেকে ২৯ লাখ ৯৯৮ টাকা, সার্কেল-১০ মাগুরায় কর্মরত থাকা অবস্থায় সোনালী ব্যাংক থেকে ৩১ লাখ ৪০ হাজার ৪৮৪ টাকা, সার্কেল-২২ ভেড়ামারায় কর্মরত থাকা অবস্থায় জনতা ব্যাংক থেকে ৪২ লাখ, সাত হাজার ৫২৭ টাকাসহ সর্বমোট তিন কোটি ৪৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪২৯ টাকা আত্মসাৎ করেন। সেই টাকা রাজস্ব তহবিলে জমা না দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাধিক বেতন হিসাব খুলে ব্যাংক থেকে টাকা নিজে উত্তোলন করেছেন।
এর আগে এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক তদন্তে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেন। বিভাগীয় তদন্তেও তাঁর বিরুদ্ধে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়। সেই তদন্ত করেছিলেন যুগ্ম কর কমিশনার মো. মঞ্জুর আলম। পরে রাজস্ব বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে মেজবাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ জানানো হয়।