রাবিতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে চলছে দুই কোটি টাকার কাজ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে দুই কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে।
আগামী দুই মাসের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করতে, শর্ট সার্কিট হলে বিদ্যুৎ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করাসহ একাধিক কাজের জন্য এরই মধ্যে ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক দুটি ‘সুইচ গিয়ার’ কেনা হয়েছে। নতুন একটি কক্ষ তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ কার্যালয়ে ওই সুইচ গিয়ার দুটি স্থাপন করা হয়েছে।
প্রথম পর্যায়ে ক্যাম্পাসকে পূর্ব ও পশ্চিমপাড়া, এই দুটি এলাকায় ভাগ করে কাজ শুরু করা হয়েছে। গত ৯ ডিসেম্বর থেকে প্রাথমিকভাবে ওই সুইচ গিয়ার দুটি চালু করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের বাসভবন, প্রশাসন ভবন, কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তন ও ছাত্রদের আবাসিক হলসহ গোটা পূর্বপাড়ায় একটি সুইচ গিয়ার দিয়ে বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ করার কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া ক্যাম্পাসের সব একাডেমিক ভবন, শিক্ষকদের ক্লাব (জুবেরী ভবন), ছাত্রীদের আবাসিক হলসহ গোটা পশ্চিম পাড়ায় অন্য সুইচ গিয়ার দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, রাবিতে প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হয়। নগরীর তালাইমারীতে অবস্থিত পিডিবি কার্যালয় থেকে ক্যাম্পাসে এই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। তাই চাইলেও আগে বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ করা যেত না। কিন্তু সুইচ গিয়ার কেনার ফলে তালাইমারী থেকে বিদ্যুৎ এসে জমা হবে ওই গিয়ারে। পরে সেখান থেকে ইচ্ছামতো ক্যাম্পাসে তা সরবরাহ করা হবে।
আবুল কালাম আজাদ আরো বলেন, আগে ঝড়ে ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হলে নতুন করে সংযোগ দিতে কয়েক দিন লেগে যেত। সেই অবস্থা থেকে বের হতে একটি লিফটার গাড়ি ও স্তূপ সরানো একটি গাড়ি কিনতে দরপত্র দেওয়া হয়েছে। স্তূপ সরানোর জন্য গাড়িটি কিনতে ৯০ লাখ টাকা ব্যয় হবে বলেও জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, আবাসিক এলাকায় এভাবে সুইচ গিয়ার দিয়ে বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ রাবিতেই প্রথম। এর ফলে একাডেমিক এলাকায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে। রাতে আবাসিক এলাকায়ও থাকবে পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহ।
উপ-উপাচার্য আরো বলেন, ক্যাম্পাসের ভেতরে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন (১১ হাজার কেভি) বিদ্যুতের তার অনেক নিচে থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটত। তাই সেই তার অনেক ওপরে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি স্থানে রাতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।