সমলয় চাষাবাদে স্বপ্ন বুনছেন কৃষক, বিঘাপ্রতি ফলন ২৯ মণ

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের বুঁজরুখ বাঁখই মাঠে প্রথমবারের মতো আধুনিক ও যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ব্রিধান-৯২ জাতের ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ১৫০ বিঘা জমিতে ১২৮ জন কৃষক সমলয় চাষাবাদ করেছেন। এ পদ্ধতিতে কম খরচে গতবারের তুলনায় বিঘাপ্রতি ফলন প্রায় আট থেকে দশ মণ বেড়েছে, যা কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক খুশির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, যান্ত্রিক পদ্ধতিতে একই মাঠে একই সময়ে একই জাতের ফসল চাষাবাদকে সমলয় বলা হয়। এ পদ্ধতিতে পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়, জমির অপচয় রোধ হয় এবং কম খরচে অধিক ফলন পাওয়া যায়। ২০২৪ অর্থবছরে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ১৫০ বিঘা জমিতে ব্রিধান-৯২ জাতের ধান চাষ হয়েছে। বিঘাপ্রতি ফলন ২৮ থেকে ২৯ মণ পাওয়া গেছে, যা সনাতন পদ্ধতির তুলনায় আট থেকে দশ মণ বেশি।
আজ মঙ্গলবার (২০ মে) বুঁজরুখ বাঁখই মাঠে সরেজমিনে দেখা গেছে, কম্বাইন্ড হারভেস্টার যন্ত্রের সাহায্যে ধান কাটা হচ্ছে। সেখানে কৃষক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কৃষক বাবুল হোসেন বলেন, গত বছর সনাতন পদ্ধতিতে ব্রিধান-৯২ চাষ করে বিঘাপ্রতি ১৮ থেকে ২০ মণ ফলন পেয়েছিলাম। এবার প্রথম যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চাষ করে ২৭ থেকে ২৯ মণ ফলন পেয়েছি। কম শ্রম ও খরচে অধিক লাভ হওয়ায় আগামীতে সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদ করব।
মাহাতাব উদ্দিনের ছেলে মোক্তার হোসেন জানান, এই পদ্ধতিতে চারা কম লেগেছে, পরিশ্রমও কম হয়েছে, আর ফলন আগের চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে। এখন থেকে যন্ত্র দিয়ে চাষাবাদ করব।
কৃষক মিঠুন বলেন, মেশিনে চারা লাগানোর কারণে জমি অপচয় হয়নি, গাছ ভালো হয়েছে এবং ফলনও ভালো হয়েছে। যান্ত্রিক চাষ প্রচলিত চাষের চেয়ে সহজ, কষ্ট ও খরচ কম। গত বছর বিঘায় খরচ হয়েছিল প্রায় ১৬ হাজার টাকা, ১৯ মণ ধান ও দুই হাজার বিছালী পেয়েছিলাম। এবার খরচ পড়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকা, আর ধান পেয়েছি ২৯ মণ।
কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুফি মো. রফিকুজ্জামান জানান, যন্ত্রের মাধ্যমে চারা উৎপাদন, রোপণ ও ধান কাটার সময় কম লাগবে। উৎপাদন বাড়বে। সমলয় চাষাবাদের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, সমলয় চাষাবাদে কম খরচে অধিক লাভ হয়। এজন্য উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রণোদনা কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।