চট্টগ্রামে ঈদে মিলাদুন্নবীর (সা.) শোভাযাত্রা

চট্টগ্রামে বিশ্বশান্তি ও দেশের সমৃদ্ধি কামনার মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে দেশের বৃহত্তম ধর্মীয় শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন উপলক্ষে আজ শুক্রবার সকালে অনুষ্ঠিত এই শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন পাকিস্তান থেকে আসা আওলাদে রাসুল খ্যাত আল্লামা সৈয়দ মোহাম্মদ তাহের শাহ ও তাঁর ছেলে আল্লামা সৈয়দ মোহাম্মদ হামেদ শাহ।
আরবি মাসের ১২ রবিউল আউয়াল মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত (মৃত্যু) দিন উপলক্ষে শোভাযাত্রাটি ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এই মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে দিনের বাকি অংশ কাটে মাহফিলের মধ্য দিয়ে।
ভোর থেকেই এ শোভাযাত্রায় অংশ নিতে মিছিল নিয়ে দলে দলে যোগ দেন দেশের নানা প্রান্তের হাজারো ধর্মপ্রাণ মানুষ।
চার থেকে পাচঁ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ধর্মীয় শোভাযাত্রাটি চলাকালে পুরো নগরী মুখরিত ছিল হামদ, নাত, রাসুলের সুর ও ইসলামী সংগীতে। অংশগ্রহনকারীরা ঈদে মিলাদুন্নবীকে সব ঈদের সেরা ঈদ বলে মনে করেন।
অংশগ্রহণকারী একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান বলেন, ‘আমরা মনে করি, চট্টগ্রামের জুলুস বিশ্বের সেরা জুলুম। এখানে ৩০ লাখ মানুষের সমাগম হয়। ১৯৭৪ সাল থেকে এই জুলুশের যাত্রা। মূলত এই জুলুশকে অনুসরণ করে বাংলাদেশের অন্যান্য জুলুসগুলো হয়েছে।’
জুলুশে লাখো মানুষের উপস্থিতি উৎসব মুখর পরিবেশ মহানবীর প্রতি ধর্মপ্রাণ মানুষের ভালোবাসা বলে জানান আল্লামা সৈয়দ তাহের শাহ।
ইসলামী চিন্তাবিধ সুফি মিজানুর রহমান বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে জসনে জুলুস ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) হচ্ছে না। সব জায়গায় এটি উদযাপিত হচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে, আল্লাহ যখন নূর হিসেবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা তারঁ শান, মান, আজমদকে পৃথিবীর মানুষকে হৃদয়ের গভীরে ধারণ করতে বলেছেন।’
আনজুমানে রহমানিয়া সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘১৯৭৬ সালে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়। তখন অনেক সুন্নি মতাদর্শের মানুষও এটির বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু এখন লাখ লাখ মানুষের অংশগ্রহণে এটি উদযাপন হচ্ছে। কেয়ামতের আগ পর্যন্ত এটি উদযাপন হবে।’
আনজুমানে রাহমানিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট ১৯৭৪ সাল থেকে এ ধরনের আয়োজন করছে বলে জানান আয়োজকরা। আনজুমানে রহমানিয়ার সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘এটি একটি খুশির দিন, আনন্দের দিন। মুসলামদের জন্য এটি সবচেয়ে বড় খুশি উদযাপনের দিন।’ প্রতি বছর অনেকটা স্বতঃস্ফূতভাবে এর কলেবর আরো বাড়বে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।