করিমগঞ্জ পৌরসভা : লড়াই হবে নৌকা-ধানের শীষ ও জগের মধ্যে

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ পৌরসভায় এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচন হতে যাচ্ছে। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় সমর্থকসহ সাধারণ ভোটারদের মধ্যে মেয়র নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনার নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী মামুন। এ পৌরসভায় নৌকা প্রতীকের বিজয়ের স্বপ্ন দেখছেন তাঁর কর্মী-সমর্থকরা। কিন্তু তাঁদের স্বপ্নকে হুমকির মুখে ফেলেছেন ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী (জগ প্রতীক) বর্তমান মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুল কাইয়ুম। গত নির্বাচনও আওয়ামী লীগের এ দুই প্রার্থীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। ২০১১ সালের ১৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী আট মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আবদুল কাইয়ুম মাত্র ৬১৪ ভোটের ব্যবধানে কামরুল ইসলাম চৌধুরী মামুনকে পরাজিত করেছিলেন।
অন্যদিকে, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী পৌর কমিটির আহ্বায়ক মো. আশরাফ হোসেন পাভেল। তবে আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও এর ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর মধ্যেই মূল লড়াই হবে বলে পৌরবাসীর ধারণা।
বিগত দিনে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় জগ প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে দাবি করে আবদুল কাইয়ুম বলেন, ‘আমার বিজয় ঠেকাতে কর্মী-সমর্থকদের ক্ষমতাসীন দলের লোকজন ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। নির্বাচিত হলে শেখ হাসিনা আমাকে কাছে টেনে নেবেন বলে আশা করছি।’
যদিও দলীয় প্রার্থীর পক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অংশ নেওয়ার কারণে কর্মী-সমর্থকদের ধারণা, শেষ পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্তের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে সবাই একাট্টা হয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে বিজয় ছিনিয়ে আনবেন।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কামরুল ইসলাম চৌধুরী মামুন বলেন, ‘পৌরবাসী ও কর্মী-সমর্থকদের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনের কারণে আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’
অন্যদিকে, ধানের শীষের পক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক মন্ত্রী ড. এম ওসমান ফারুক রয়েছেন। এ কারণে নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী হয়ে উঠছেন বিএনপির কর্মী-সমর্থকরাও।
বিএনপির মো. আশরাফ হোসেন পাভেল বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জনগণ ধানের শীষের পক্ষে রায় দেবে। কিন্তু আমার কর্মী-সমর্থকদের ভয়-ভীতি দেখানো ও পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে।’
করিমগঞ্জ পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ২১৪ জন। নির্বাচনে তিন মেয়র পদপ্রার্থী ছাড়া নয়টি ওয়ার্ডে ৩৮ জন এবং তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৩ মহিলা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে, প্রার্থীদের প্রতীকসংবলিত পোস্টারে ছেয়ে গেছে নির্বাচনী এলাকা। সে সঙ্গে সমর্থকদের মিছিল ও মাইকযোগে চলছে বিরামহীন প্রচার। ভোর থেকে গভীর রাত অবধি প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা।
নির্বাচন সামনে রেখে তিন মেয়র পদপ্রার্থী আশ্বাস দিচ্ছেন নাগরিক সেবা বৃদ্ধি ও অবকাঠামো উন্নয়নের। তবে ভোটাররা বলছেন, প্রতীক নয়, যিনি সমস্যা সমাধান করে উন্নয়নের কাজ করতে সক্ষম এবং বিগত দিনে পাশে ছিলেন, এমন প্রার্থীকেই তাঁরা নির্বাচিত করবেন।
নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মঞ্জুরুল আলম।