বিদ্যালয়ের অনুদানে ছাত্রলীগের বাধা!

নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার একটি বিদ্যালয়ে আগ্রহী দাতা সদস্যদের কাছ থেকে অনুদান গ্রহণে বাধা দিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাদের বিরুদ্ধে আগ্রহী দাতা সদস্যদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে শিবপুরের লাখপুর শিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এই ব্যাপারে দাতা সদস্য প্রার্থী এ কে এম মাহবুবুল হক চৌধুরী শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, লাখপুর শিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার ছিল দাতা সদস্যদের অনুদান গ্রহণের শেষ দিন। নির্দিষ্ট সময়ে একাধিক আগ্রহী শিক্ষানুরাগী অনুদান দিয়ে দাতা সদস্য হতে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন। কিন্তু সেখানে আগে থেকেই স্থানীয় দুলালপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক স্বাধীনের নেতৃত্বে একদল বহিরাগত অবস্থান নেন। তাঁরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম খোকনকে দোতলার একটি কক্ষে নিয়ে নিচের গেট বন্ধ করে দেন। দাতা সদস্য হতে আগ্রহীরা অনুদান নিয়ে ওপরে যেতে চাইলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাঁদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে দোতলায় ওঠার দরজা বন্ধ করে দেন।
মাহবুবুল হক চৌধুরী বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আমজাদ হোসেন রেনু নিজের ছেলে মাহবুবুল আলম নাজিরকে দাতা সদস্য বানাতে পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ কারণে দাতা সদস্য নিয়োগে প্রতিযোগিতা না হওয়ায় বিদ্যালয়ের বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তাই আমরা প্রশাসনের কাছে নতুন করে দাতা সদস্য নিয়োগ প্রক্রিয়া গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।’
লাখপুর শিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সভাপতি আমজাদ হোসেন রেনু ও প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম খোকন একটি সিন্ডিকেট করে স্কুলের নিয়োগ ও কোচিং বাণিজ্য এবং প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ করছেন। এরই অংশ হিসেবে সবকিছু নিজেদের আয়ত্তে রাখতে পরিকল্পিতভাবে বহিরাগতদের দিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘নিচে বিশৃঙ্খলা হওয়ায় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের পরামর্শক্রমে আমি ওপরের কম্পিউটার কক্ষে অবস্থান নিই। ওই স্থানে শুধু মাহবুবুল আলম নাজিরের অনুদান জমা পড়ে। তবে আগ্রহীদের বাধা দেওয়া হয়েছে কি না তা আমার চোখে পড়েনি।’
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আমজাদ হোসেন রেনুর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শিবপুরের ইউএনও আশরাফুল আফসার বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হবে। প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।