অভিযানে ‘অনিয়ম’, ইউএনওর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

ভোলার দৌলতখানের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অপসারণ দাবি করে ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রেখে ধর্মঘট ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
গতকাল সন্ধ্যা থেকে আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত উপজেলা সদরের সব দোকানপাট বন্ধ ছিল। এ সময় ব্যবসায়ীরা মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
এ সময় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, ইউএনও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে রসিদ ছাড়াই টাকা গ্রহণ করেন এবং গতকাল অভিযান চলাকালে এক চা দোকানি শিশুর ওপর ফ্ল্যাক্সসহ গরম পানি ছুড়ে মেরেছেন।
তবে ইউএনও মো. মুস্তাফিজুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘এসব মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।’
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলা প্রশাসন শহরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় শহরের উত্তর মাথায় বাসস্ট্যান্ডের কাছে লিমনের চায়ের দোকানেও অভিযান চালানো হয়। এ সময় চা দোকানি লিমনের গায়ে গরম পানি পড়ে। পরে ব্যবসায়ীরা এসে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
এ ঘটনার পর থেকে ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রাখেন। আজ সকাল ৯টায় ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহরের উত্তর মাথা বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে দক্ষিণ মাথা হয়ে পুরো শহর প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়।
সেখানে চা দোকানি শিশু লিমন অভিযোগ করেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত তার দোকানে এসে পান, কাপ সব ফেলে দেয়। ভেঙে ফেলে সব। এ সময় সে চা বানাচ্ছিল। একপর্যায়ে রেগে গরম পানিভর্তি ফ্লাক্স ছুড়ে মারা হয় তার গায়ে।
দোকানের মালিক মো. জুনায়েদ বলেন, মাগরিবের নামাজ পড়ে আসার পর এসব ঘটনা ঘটে। লিমনের চিৎকারে সবাই এগিয়ে এসে তাকে দৌলতখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয়।
ব্যবসায়ী মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘ইউএনও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রত্যেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এক হাজার করে টাকা নেন। যার কোনো রসিদ দেওয়া হয় না। শুধু তাই নয়, মারধর পর্যন্ত করা হয় ব্যবসায়ীদের।’
সমাবেশ চলাকালে পৌর মেয়র মো. জাকির হোসেন তালুকদার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেনসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে ব্যবসায়ীদের আশ্বাস দিলে তাঁরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন।
এ ব্যাপারে ইউএনও মো. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘অবৈধভাবে তারা ব্যবসা বাণিজ্য করছিলে। ব্যবসায়ীরা বাজারে ধর্মঘটের চেষ্টা করে, এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক, কোনো সমস্যা নেই।
এ সময় চা বিক্রেতা শিশু লিমনের ওপর গরম পানি ছুড়ে মারার ঘটনা অস্বীকার করে ইউএনও বলেন, এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। তবে কোনো শিশুর ওপর ফ্লাক্স হয়তো লাগতে পারে। আমি খেয়াল করিনি। আর রসিদ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতে কোনো জরিমানা করা হয় না। টাকা নিতে হলে রসিদের পেছনে স্বাক্ষর থাকতে হবে।
এসব বিষয়ে দৌলতখান থানার ওসি মো. এনায়েত হোসেন বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য আগে থেকে কোনো পুলিশ ফোর্স নেওয়া হয়নি। তবে বাজারে কর্তব্যরত পুলিশকে নেওয়া হয়েছে।