পুলিশের সন্দেহ ‘বাঙ্কার’, জামায়াতের দাবি ‘বেজমেন্ট’

যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া বাজারের গাইদগাছি এলাকায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের একটি কার্যালয়ে পেছনে বাঙ্কার নির্মাণ সন্দেহে ঘটনাস্থল থেকে ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, এ সময় সেখান থেকে কয়েকটি হাতবোমা, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
তবে জেলা জামায়াতে ইসলামীর এক নেতার দাবি, এটা বাড়ির বেজমেন্ট। পুলিশ সেটাকে বাঙ্কার বলে চালানোর চেষ্টা করেছে।
আটককৃতরা হলেন সাতক্ষীরার বিল্লাল হোসেন (১৮), খুলনার ডুমুরিয়া এলাকার নুরুজ্জামান (২৬), শাহিন হোসেন (২২), ফারুক (২৪), শহিদুল ইসলাম (২৪), যশোরের অভয়নগর উপজেলার ধলিরগাতি এলাকার আবদুল খালেক (২৫), ইকরাম (২২), বিপ্লব হোসেন (২৫), সদর উপজেলার কেফায়েতনগর এলাকার আবদুস সালাম (২৭), আল আমিন (২৩), খুলনার কয়রা উপজেলার কৈখালি এলাকার বাদশাহ (২৪) ও গাইদগাছি এলাকার টিটো (২৬)। এঁদের বেশির ভাগই নির্মাণ শ্রমিক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস হোসেন জানান, গাইদগাছি এলাকার রাশেদুল ইসলামের মেহগনি বাগানের ভেতরে মাটির নিচে ৩৮ ফুট লম্বা, ১২ ফুট চওড়া এবং আট ফুট গভীর একটি পাকা ঘর নির্মাণ করা হচ্ছিল।
ওসি আরো জানান, দেখতে অস্ত্র ও বোমা রাখার বাঙ্কারের মতো লম্বা এ ঘরে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১২ জনকে আটক করে। এ সময় ১০টি হাতবোমা, দুই কেজি জালের কাঠি, দুই কেজি কাচের টুকরো, আধা কেজি পটাশ, আড়াইশ গ্রাম সাইকেলের বল, ২০০ গ্রাম বারুদ, ১৫টি লাঠি, জামায়াতের গঠনতন্ত্র ও প্রচারপত্র উদ্ধার করা হয়।
জেলা পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, জমির মালিক জামায়াতের লোক। তাঁর ছেলে ছাত্রশিবিরের ক্যাডার। আর মাটির নিচে নির্মাণাধীন ওই ঘরে কোনো সিঁড়ি নেই। ফলে সন্দেহ হওয়াই স্বাভাবিক। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জামায়াত-শিবিরের কয়েকজনকে থানায় নেওয়া হয়েছে।
এদিকে জামায়াতে ইসলামীর জেলা পর্যায়ের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এটি নির্মাণাধীন একটি বাড়ির বেজমেন্ট। নিচে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ঘর নির্মাণ করা হচ্ছিল। এটিকে যদি পুলিশ বাঙ্কার বলে চালাতে চায় তাহলে আর কিছু বলার থাকে না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এই এলাকাটি জামায়াত প্রভাবিত। যেখানে স্থাপনাটি করা হচ্ছে, তার সামনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের একটি আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে।