সিএমপির ১৩৯ সিসি টিভি ক্যামেরার ১৩টি সচল

চট্টগ্রাম নগরীতে দুই বছর আগে ১৩৯টি ক্লোজড সার্কিট (সিসি) টিভি ক্যামেরা বসানো হয়। এর মধ্যে সচল আছে মাত্র ১৩টি। এতে অনেক ক্ষেত্রেই অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি)।
সিএমপি সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের জুন মাসে তৎকালীন সিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (গোয়েন্দা) বাবুল আক্তারের নেতৃত্বে নগরীর সাতটি প্রবেশমুখসহ গুরুত্বপূর্ণ ২৬টি স্থানে ১৩৯টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে বর্তমানে মাত্র ১৩টি ক্যামরা সচল। নগরীর জিইসি মোড় ও প্রবর্তক মোড়ে স্থাপিত আটটি ক্যামেরার মধ্যে ছয়টিই নষ্ট হয়ে গেছে।
নগরীতে ক্যামেরা স্থাপনের সময় বাবুল আক্তার বলেছিলেন, ‘ক্যামেরার কারণে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে। পুরো নিরাপত্তা সিএমপির হাতের মুঠোয় চলে আসবে।’
বর্তমানে বাবুল আক্তার পদোন্নতি পেয়ে ঢাকায় পুলিশ সুপার (এসপি) হয়েছেন। গত ৫ জুন বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খাতুন মিতুকে (৩৫) কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার একটি দৃশ্য একটি সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। সেখানে দেখা যায়, ওই দিন সকালে মাহমুদা তাঁর ছেলেকে নিয়ে রাস্তায় আসেন। ওই সময় এক ব্যক্তি ফোনে কথা বলতে বলতে রাস্তার এক পাশ থেকে অন্য পাশে (মাহমুদা যে পাশে ছিলেন) যাচ্ছে।
হত্যাকাণ্ডের মুহূর্তের পর একটি মোটরসাইকেলে তিনজন আরোহী ও পরে একটি কালো মাইক্রোবাসে চলে যাওয়ার দৃশ্যও ওই ফুটেজে ধরা পড়ে।
নগরীর জিইসি মোড়ের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ভিডিও ফুটেজ থেকে উদ্ধার করা হয় এসব তথ্য। কিন্তু সিএমপির সিসি টিভি ক্যামেরায় মেলেনি ঘটনার কোনো তথ্য।
চট্টগ্রামের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দি অ্যাডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিল্পী দীপক দত্ত জানান, তাঁর একটা ল্যাপটপ অফিস থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। এরপর বাবুল আক্তার তা উদ্ধার করে দিয়েছিলেন। তিনি সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে চোরকে চিহ্নিত করেছিলেন।
বাবুল আক্তারের স্ত্রীর হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য সিসি টিভি ক্যামেরা থেকে না পাওয়ার বিষয়ে দীপক দত্ত বলেন, ‘ক্যামেরা যদি অনেক বেশি থাকত, তবে কোনো না কোনো ফুটেজ কিন্তু বের হতো। একটা না হয় আরেকটা থেকে পাওয়া যেত। এটা বড় সহযোগিতার ব্যাপার ছিল।’
ক্যাবল লাইন অপারেটর সিসিএলের পরিচালক শ্যামল পালিত কাঞ্চন বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও মোড়গুলো ক্যামেরার মাধ্যমে সিএমপির কন্ট্রোল রুম থেকে আগে মনিটর করা যেত। কিন্তু বর্তমানে নগরীর সব স্থানের ক্যামেরাগুলো সচল নেই।’
সিএমপির কমিশনার ইকবাল বাহার বলেন, ‘আমরা মোট ১৩৯টি ক্যামেরা লাগিয়েছিলাম। এখন কার্যকর ১৩টি মাত্র। বিল বোর্ড উচ্ছেদের সময় অনেকগুলোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেগুলোতে আবার সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।’
সিএমপির কমিশনার জানান, সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় নগরীতে আবার সিসি টিভি ক্যামেরাগুলো পুনরায় স্থাপন করতে চায় সিএমপি।