জনতার পাল্টা আঘাতও আইনসিদ্ধ, সংবিধান স্বীকৃত

আজ শনিবার সাতক্ষীরা শহরের রাধা শ্যামসুন্দর ইসকন মন্দিরে সর্বস্তরের মানুষের হাতে লাঠি ও বাঁশি তুলে দেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মনির উজ জামান। ছবি : এনটিভি
পুলিশের খুলনা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এস এম মনির উজ জামান বলেছেন, ‘সন্ত্রাসী কায়দায় কেউ আপনার জানমাল বিনষ্ট করার চেষ্টা করলে আপনিও পাল্টা আঘাত করুন। যে কোনো মানুষের আত্মরক্ষার আইনগত অধিকার আছে। এ ক্ষেত্রে পাল্টা আঘাতও আইনসিদ্ধ। এটা সংবিধান স্বীকৃত।’
এ সময় ডিআইজি আরো বলেন, ‘একাত্তরের অশুভ শক্তির প্রেতাত্মারা নতুন করে মাথা চাড়া দিতে চায়। জনগণ রুখে দাঁড়ালে তারা নিশ্চিহ্ণ হয়ে যাবে।’
আজ শনিবার সাতক্ষীরা শহরের রাধা শ্যামসুন্দর ইসকন মন্দিরে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আগত সর্বস্তরের মানুষের হাতে লাঠি ও বাঁশি তুলে দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন এস এম মনির উজ জামান।
অধ্যক্ষ কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির, খুলনার পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি মনোরঞ্জন মুখার্জি, সাধারণ সম্পাদক অনিত মুখার্জি, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সভাপতি বিশ্বজিৎ সাধু, সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার শীল, মন্দির সমিতির সাবেক সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষ, প্রেসক্লাব সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লাঠি ও বাঁশি একটি প্রতীকী প্রতিবাদ উল্লেখ করে ডিআইজি বলেন, শান্তিপ্রিয় জনগণের হাতে এই লাঠি তুলে দিয়ে তাদের উৎসাহিত করতে হবে। নিজ গ্রামে ও পাড়ায় সন্ত্রাসীদের হামলা প্রতিরোধে লাঠি ও বাঁশি তাদের সাহস জোগাবে।
‘এই লাঠি-বাঁশি সন্ত্রাসীর জন্য নয়, বাড়িঘর-চর বা জমি দখলের জন্যও নয়। কেবলমাত্র সন্ত্রাসীদের বিতাড়নের কাজে তা ব্যবহৃত হবে। নিজ এলাকায় কোনো সন্ত্রাসীর আনাগোনা দেখলে মসজিদ-মন্দির-প্যাগোডা-গির্জা থেকে সবাইকে খবর দিয়ে একযোগে লাঠি নিয়ে প্রতিহত করতে হবে।’
এখন শুধু প্রতিবাদ নয়, প্রতিরোধের শিখা ছড়িয়ে দিতে হবে উল্লেখ করে এস এম মনির উজ জামান আরো বলেন, লাঠি-বাঁশিকে নেতিবাচক নয় ইতিবাচক হিসেবে দেখে সন্ত্রাসের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
সমাবেশে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির বলেন, ২০১৩ সালে সাতক্ষীরার বীর জনতা যেভাবে সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের লাঠি দিয়ে প্রতিহত করেছিল এবারও তারা তাই করতে প্রস্তুত। লাঠি শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতীক উল্লেখ করে পুলিশ সুপার আরো বলেন, পুলিশে জনবল সংকট আছে। পুলিশের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনতা লাঠি হাতে প্রতিরোধ করলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাবে।
জনতার হাতে লাঠি তুলে দেওয়া নিয়ে কেউ কেউ বিতর্ক সৃষ্টি করতে চায় মন্তব্য করে চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির আরো বলেন, ‘যারা এই বিতর্ক তোলেন, তারাই সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা।’ তিনি আরো বলেন, আত্মরক্ষা এবং নিজের সম্পদ রক্ষা ছাড়াও অন্যের জীবন রক্ষা এবং সম্পদ রক্ষার সময় কোনো প্রাণহানি ঘটলে তার দায় আসবে না।
সমাবেশে খুলনার পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, গুটি কয়েক লোক সমাজে অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায়। এরা সংখ্যায় খুবই নগণ্য। অপরাধীকে প্রতিহত করতে প্রয়োজনে পাল্টা-আঘাত করা আইনে অনুমোদিত।