ভেড়ামারা-হাদল সড়কের বেহাল দশা, জনদুর্ভোগ চরমে

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের ভেড়ামারা থেকে ফরিদপুর উপজেলার হাদল পর্যন্ত তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি বেহাল দশায় পতিত হয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কারবিহীন থাকায় সড়কটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন শতশত মানুষ ও যানবাহন, ফলে এলাকাবাসীর দৈনন্দিন জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
আজ বুধবার (২৯ মে) সরেজমিনে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২০১২ সালে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে এই সড়কটি নির্মাণ করে। তবে নির্মাণের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সড়কটির বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেয়। এরপর একে একে পুরো রাস্তাটিই ভেঙে পড়ে। এলাকাবাসীর অভিযোগ করে বলে, নির্মাণের সময় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে সড়কটি বেশি দিন টেকসই হয়নি। নির্মাণের তিন থেকে চার বছরের মধ্যেই এটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়।
বর্তমানে সড়কটির অধিকাংশেই বড় বড় গর্ত, ভাঙাচোরা খোয়া এবং কোথাও কোথাও কাঁচা মাটির মতো হয়ে গেছে। বর্ষাকালে এসব গর্তে পানি জমে চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি শুকনো মৌসুমেও এই রাস্তায় চলতে গিয়ে যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা পড়ে যান চরম ঝুঁকিতে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে শিক্ষার্থী, কৃষক, ব্যবসায়ী, রোগীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ চলাচল করেন। এলাকাবাসী অবিলম্বে রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
হাটগ্রামের বাসিন্দা মো. আব্দুল কাদের বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে বাজারে যেতে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়। রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে হলে আরও সমস্যা হয়। এমনকি গর্ভবতী নারীদের নিয়ে যেতে অনেক সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়।’
একই এলাকার শিক্ষার্থী মাহি আক্তার বলেন, ‘প্রতিদিন স্কুলে যেতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। গাড়ি পাওয়া যায় না, আর পেলেও রাস্তায় এত গর্ত যে গাড়ি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।’
গাড়িচালকদের অভিজ্ঞতাও ভয়াবহ। স্থানীয় সিএনজি চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে প্রতিদিন আমাদের গাড়ির চাকা, যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। যাত্রী নিয়ে যেতে ভয় লাগে, দুর্ঘটনা হলে দায় নেবে কে?’
পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেদায়েতুল হক রাস্তার দুরবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার জানানো হলেও এখনও কোনো সংস্কার কাজ শুরু হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি নিজে সড়কটি পরিদর্শন করেছি। আমরা সড়কটি সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। প্রকল্প অনুমোদন হলে দ্রুত সড়কটির কাজ শুরু করা হবে।’