সেবায়েত হত্যাকারীদের ধরা হবে : কমিশনার

সরকারকে উৎখাত করার জন্য ষড়যন্ত্র করে টার্গেট কিলিং ও গুপ্তহত্যা করা হচ্ছে। একটি গোষ্ঠী এসব হত্যার উসকানি দিচ্ছে। এ জন্য দেশের অভ্যন্তরে ও বিদেশে চক্রান্ত করা হচ্ছে। জড়িতদের চিহ্নিত করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করা হবে। সেই সঙ্গে এদের সামাজিকভাবেও মোকাবিলা করতে হবে।
আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আইন শৃঙ্খলাবিষয়ক বিশেষ সভায় খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুস সামাদ এসব কথা বলেন।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুপুর মঠের সেবায়েত শ্যামানন্দ দাস আজ সকালে খুন হন। এ খুনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে বিশেষ এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় বিভাগীয় কমিশনার সেবায়েত হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হবে বলে আশ্বাস দেন।
একই আশ্বাস দেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এ এস এম মনিরুজ্জামান। তিনি বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় সমাজের সবাইকে এক জোট হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, ঝিনাইদহের পুরোহিত আনন্দ গোপাল হত্যাসহ সব হত্যার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে এবং কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
সভার আগে বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজিসহ বিভাগীয় কর্মকর্তারা ঝিনাইদহের সদর উপজেলার মধুপুর রাধা-মদন-গোপাল মঠ পরিদর্শন করেন। তাঁরা সেখানে উপস্থিত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে সান্ত্বনা দেন এবং সেবায়েত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
পরে জেলা প্রশাসক মো. মাহবুব আলম তালকুদারের সভাপতিত্বে সভায় বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশের ডিআইজিসহ আরো বক্তব্য দেন বিজিবি-৫৮ ব্যাটালিয়ান কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম, র্যাব-৬ খুলনার কমান্ডিং অফিসার, অতিরিক্ত রেঞ্জ ডিআইজি একরামুল হাবিব, পুলিশ সুপার মো. আলতাফ হোসেন, ঝিনাইদহ সদর পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু, জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট আবদুল ওয়াহেদ জোয়ারদার, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুবীর সমাদ্দার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মকবুল হোসেন প্রমুখ।
এ ছাড়া সভায় বিভ্ন্নি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, রাজনৈতিক-সামাজিক প্রতিষ্ঠানের নেতাকর্মী, সরকারি কর্মকর্তা, জেলার ছয় উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও ছয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি) উপস্থিত ছিলেন।
সভায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্রধারীদের ওপর নজর রাখার জন্য থানার ওসিদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি স্ব স্ব এলাকার মোটরসাইকেল মালিকদের প্রতিও লক্ষ রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা নারায়ণ চন্দ্র জানান, নিহত সেবায়েত শ্যামানন্দকে সদর উপজেলার মধুপুর মঠেই সমাহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ মামলা করেনি বলে জানান সদর থানার ওসি হাসান হাফিজুর রহমান।
ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য আব্দুল হাই এবং সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দকে সান্ত্বনা দেন।