আট দিন হাসপাতালে থেকে না-ফেরার দেশে জিহান
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/07/15/photo-1468560668.jpg)
আট দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে না-ফেরার দেশে চলে গেছে নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র জিহান (১৪)। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
জিহান মনোহরদী উপজেলার শুকুন্দী গাছুয়ারকান্দা গ্রামের প্রবাসী মোস্তফা কামাল ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য সেলিনা বেগমের ছোট ছেলে। সে শাহাবুদ্দিন মেমোরিয়াল একাডেমিতে পড়ত। ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের দিন আনন্দ উপভোগ করতে বন্ধুদের সঙ্গে কিশোরগঞ্জের ভৈরব ব্রিজ ও আশপাশের এলাকায় বেড়াতে যায় জিসান। বেড়ানো শেষে সেখান থেকে বাসে করে বাড়ির উদ্দেশে আসছিল সে। পথে শিবপুর উপজেলার সিঅ্যান্ডবি বাসস্ট্যান্ডে গাড়ির চালক তাদের নামিয়ে দেন।
গন্তব্যস্থলে পৌঁছার আগেই গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়ায় বাসের চালকের সঙ্গে জিহান ও তার বন্ধুদের কথাকাটাকাটি হয়। এ সময় বাসচালকের সহকারী ও স্থানীয় মোহরপাড়া গ্রামের কাজল মিয়ার ছেলে রবিন, রুহুল আমিনের দুই ছেলে হাবিবুল্লাহ ও মেহেদী, নুরুল ইসলামের ছেলে শাকিল ও দোপাত্তর গ্রামের হাসেম গাছের ডাল নিয়ে জিহান ও তার বন্ধুদের ওপর হামলা করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
হামলার সময় জিহানের বন্ধুরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। তবে জিহানকে আটকে ফেলে তারা। এ সময় ওই লোকজন জিহানকে এলোপাতাড়ি পেটায়। গাছের ডালা দিয়ে মাথায় আঘাত করে।
পরে স্থানীয় লোকজন জিহানকে উদ্ধার করে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। চিকিৎসক তার সিটি স্ক্যান করে মাথায় জরুরি অস্ত্রোপচার করার পরামর্শ দেন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়।
অস্ত্রোপচারের পর জিহানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। সেখানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জিহানকে লাইফসাপোর্টে রাখা হয়েছিল। গতকাল অষ্টম দিনে মারা যায় সে।
এর আগে গত রোববার সন্ধ্যায় জিহানের মা সেলিনা বেগম বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে শিবপুর থানায় একটি মামলা করেন।
গতকাল জানতে চাইলে সেলিনা বেগম বলেন, ‘বিনা কারণে যারা আমার ছেলেকে নিষ্ঠুর নির্যাতন করে হত্যা করেছে, আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
শিবপুর থানার সেকেন্ড অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল বাশার বলেন, ঘটনার পর থেকে আসামিরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।