রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ চুক্তি বাতিলের দাবি

সুন্দরবনের পাশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মৌলিক অবকাঠামো স্থাপনে ভারত-বাংলাদেশ চুক্তি বাতিল করার দাবি জানিয়েছে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির খুলনা শাখা।
আজ শুক্রবার সকালে খুলনা-যশোর রোডে নিজস্ব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান সংগঠনের সদস্য সচিব মো. বাবুল হাওলাদার।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের পক্ষে চার দফা দাবি পেশ করা হয়। সেগুলো হলো—অবিলম্বে রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অবকাঠামো উন্নয়ন চুক্তি বাতিল, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে তা নিরাপদ দূরত্বে হস্তান্তর, সুন্দরবনের পাশে ওরিয়নসহ সুন্দরবনের জন্য ক্ষতিকর সব ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ এবং সুন্দরবন রক্ষায় বিজ্ঞানসম্মত সার্বিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করা।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, কয়েক বছর ধরে দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদসহ সব মহল তাদের বিজ্ঞানভিত্তিক যুক্তি দিয়ে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন যে রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ দুভাবেই সুন্দরবনের পরিবেশ-প্রতিবেশ ও অর্থনীতির অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করবে।
সংগঠনটির সদস্য সচিব বলেন, ‘সুন্দরবনের এত কাছে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলে তা থেকে বিষাক্ত গ্যাস ও রাসায়নিক বর্জ্য নিশ্চিতভাবে সুন্দরবনের গাছপালা, তৃণলতা-গুল্ম, পশু-পাখি, জলজ প্রাণীসহ সার্বিক ও অন্যান্য জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করবে। বনের ওপর নির্ভরশীল দুই কোটি মানুষের জীবিকা বিনষ্ট হবে এবং সারা দেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকটে, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান সাইক্লোনজনিত ধ্বংসলীলার চারণভূমিতে পরিণত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, সরকার নিয়ম ভঙ্গ করে পরিবেশগত সমীক্ষা প্রণয়নের অনেক আগেই জমি অধিগ্রহণ করেছে। প্রকল্পের বিষয়ে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মতামত গ্রহণ করা হয়নি। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি প্রকৃতি সংরক্ষণশীল আইন নীতিনিয়ম ও কনভেনশনকে লঙ্ঘন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ প্রকল্পের আর্থিক সমীক্ষা প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে যে রামপাল প্রকল্পর আর্থিক উপযোগিতা নেতিবাচক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের আহ্বায়ক এম এম শাহনেওয়াজ আলী, অধ্যাপক ভাস্কর, শেখ সাদি ভূঁইয়া প্রমুখ।