ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানিতে বন্দি ৪ লাখ মানুষ, তলিয়েছে সড়ক
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/07/26/photo-1469553175.jpg)
কুড়িগ্রামে ধরলার নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সরকারি হিসাব মতে, জেলার ৯ উপজেলায় এক লাখ ১০ হাজার ৪৭৬ পরিবারের চার লাখ ২৯ হাজার ৪৮৫ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে ৯ উপজেলার ৪০০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ও ৫০ কিলোমিটার পাকা সড়ক।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে পাঁচ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃদ্ধি পেয়েছে তিস্তা ও দুধকুমারের পানিও।
এ দিকে সদর উপজেলার কুমরপুর এলাকায় কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী মহাসড়কে পানি ওঠায় ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলাসহ বঙ্গসোনাহাট স্থলবন্দরের সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বাঁধ ধসে যাওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী যাত্রাপুর হাট। দুই শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিমজ্জিত রয়েছে আমন বীজতলা, পাট ও সবজি ক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলের মাঠ।
বানভাসীরা ঘরবাড়ী ছেড়ে পাকা সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানিসহ খাদ্য সংকটে রয়েছে বানভাসীরা। সংকট দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যেরও। সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ বেশিরভাগ বন্যাকবলিত মানুষের।
সদর উপজেলার মধ্যকুমরপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. আমিরুল ইসলাম জানান, সোমবার হঠাৎ করে মাদ্রাসার মাঠে ৩ থেকে ৪ ফুট পানি উঠে যাওয়ায় জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের সঙ্গে কথা বলে মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মাদ্রাসার ঘরের মেঝে ও বারান্দা জেগে থাকায় সেখানে বন্যার্তরা আশ্রয় নিচ্ছে।
গরু-ছাগল ও পরিবারের লোকজন নিয়ে পাকা সড়কে আশ্রয় নেওয়া মমিনুল জানান, বাড়িতে পানি উঠার পরও খুব কষ্ট করে পাঁচদিন ধরে ছিলাম। পানি অতিরিক্ত মাত্রায় বাড়ার ফলে আর থাকা যাচ্ছে না। তাই পাকা রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছি।
জেলা সিভিল সার্জন সূত্রে জানা গেছে, ৯ উপজেলায় ৮৫টি মেডিকেল টিম বন্যার্তদের জন্য কাজ করছে।
জেলা প্রশাসন থেকে আট লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ১৯২ মেট্রিক টন চাল ও এক হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে ৯ উপজেলায় ২০৮ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে তিন লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।