শরীয়তপুরে ৫০ গ্রাম প্লাবিত

শরীয়তপুরে ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মার পানি ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যার পানি ঢুকে জেলার ভেদরগঞ্জ, জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলার ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার মোট ৫০টি গ্রামের ৪০ হাজারেরও অধিক মানুষ। পরিস্থতি মোকাবিলা করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি সভা করা হয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সাতদিন ধরে পদ্মার পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। নিম্নাঞ্চলে ঢুকে পড়ছে পানি। এতে নষ্ট হয়ে গেছে প্রায় দেড় হাজার একর জমির বোনা আমন ও রোপা আমন। অনেকেই ঘরের ভিতর মাচা পেতে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বাড়ির ভিতর পানি উঠে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে পদ্মা তীরবর্তী গ্রামের মানুষ।
দুর্গত এলকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ। জেলার প্রায় ৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ঢুকে বন্ধ হয়ে গেছে পাঠদান কার্যক্রম। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
পরিস্থতি মোকাবিলা করতে জেলার সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), চেয়ারম্যান, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে আজ রোববার সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসকের সভা কক্ষে জরুরি সভা করেছেন জেলা প্রশাসক। বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে পদ্মার পানি বৃদ্ধির ফলে নদীতে সৃষ্ট প্রবল স্রোতের কারণে জাজিরা উপজেলার মাঝিরঘাট থেকে গোসাইরহাট উপজেলার কোদলপুর পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার বিস্তৃর্ণ এলাকায় তীব্র নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের শিকার হয়ে বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে ভাঙন কবলিতরা। গৃহহীন হয়ে পড়েছে দুই শতাধিক পরিবার।
জেলার নড়িয়া উপজেলার চর নড়িয়া গ্রামের রহিমা খাতুন (৪০) বলেন, ‘বন্যায় আমাগো বাড়িঘর সব কিছু তলাইয়া গেছে। আমরা অহনো কোনো সাহায্য পাই নাই। আমাগো টিউবয়েল তলাইয়া গেছে। আমাগো অহন নদীর পানি খাইতে অয়।’
জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, বন্যা ও নদী ভাঙনকবলিত এলাকার দুর্গতদের প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। নতুন নতুন প্লাবিত এলাকার তালিকা সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। আজকালের মধ্যেই দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শুরু করা হবে।