সেপটিক ট্যাংকে নেমে ঝরে গেল ৫ শ্রমিকের প্রাণ

একজন নয়, দুজন নয়; একে একে পাঁচজন নির্মাণশ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার বিকেলে যশোরের কেশবপুর উপজেলার ত্রিমোহিনী ইউনিয়নের বরণডালি শাহাপুর গ্রামের একটি সেপটিক ট্যাংকে নামার পর এই ঘটনা ঘটে।
যশোর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক পরিমল কুণ্ডু এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, পাঁচজনই সেপটিক ট্যাংকের বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, বরণডালি শাহাপুর গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী ওজিয়ার রহমান কারিকরের বাড়ির শৌচাগারের জন্য নবনির্মিত সেপটিক ট্যাংকের ওপরের অংশ ১৮ থেকে ২০ দিন আগে ঢালাই দেওয়া হয়। আজ বিকেল ৫টার দিকে ওই সেপটিক ট্যাংকের মুখের ঢাকনা খুলে ঢালাইয়ের নিচের বাঁশ-তকতা ছাড়াতে নির্মাণ শ্রমিকরা ভেতরে নামেন। একে একে পাঁচজন নেমে বিষাক্ত গ্যাসে সবার মৃত্যু হয়। সংবাদ পেয়ে পাশের মণিরামপুর উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে সেপটিক ট্যাংক থেকে পাঁচজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন সরসকাটি গ্রামের রাজ আলী গাজীর ছেলে আবদুল আহাদ গাজী (৪৫) ও তাঁর ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৩), বরণডালি গ্রামের কলিম উদ্দিন শেখের ছেলে হেড মিস্ত্রি ইকবাল হোসেন (৩৫), খলিলুর রহমান সরদারের ছেলে আবদুল হামিদ (২২) ও মির্জানগর গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে আল আমীন (২৮)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেলে সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা খুলে প্রথমে হেড মিস্ত্রি ইকবাল হোসেন ভেতরে ঢোকেন। কিন্তু তিনি না ফেরায় তাঁকে উদ্ধার করতে ট্যাংকের ভেতরে গেলে একে একে আরো চারজন মারা যান।
মণিরামপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, সেপটিক ট্যাংকের ঢালাইয়ের পর মুখের ঢাকনা খুলে রাখতে হয়। কিন্তু মুখের ঢাকনা বন্ধ থাকায় ট্যাংকের ভেততে মিথাইল গ্যাসের সৃষ্টি হয়। ওই গ্যাসেই নির্মাণ শ্রমিকরা মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরিফ রায়হান কবির ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শেখ আবু শাহীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।