স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ, স্বজনদের বিক্ষোভ

ঝিনাইদহ জেলা শহরের বনানীপাড়ায় স্বামী নাজমুল হাসান জুয়েলের (২৫) বিরুদ্ধে স্ত্রী তানজিলা আক্তারকে (২২) হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
জুয়েলকে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে তানজিলার লাশ নিয়ে তাঁর স্বজন ও এলাকাবাসী শহরে বিক্ষোভ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিহত তানজিলা ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কোরাপাড়া গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আবদুল গণির বড় মেয়ে। তানজিলা রাজধানীতে পপুলার হাসপাতালে সেবিকা (নার্স) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ২৯ এপ্রিল জেলা শহরের বনানীপাড়ার নাজমুল হাসান জুয়েলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। জুয়েল পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী আবদুল বাকী বিল্লার ছেলে।
নিহত তানজিলার বাবা আবদুল গণি বলেন, সম্প্রতি সরকারি হাসপাতালে নার্সের চাকরি হয়েছিল তানজিলার। আজ মঙ্গলবার তাঁর ঢাকায় চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল।
আবদুল গণি অভিযোগ করে বলেন, জুয়েল প্রেমের ফাঁদে ফেলে তানজিলাকে বিয়ে করে। চাকরির জন্য তানজিলাকে ঢাকায় যেতে হতো। এ সুযোগে বিয়ের মাত্র চার মাসের মধ্যে জুয়েল অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। এ ক্ষেত্রে তানজিলা বাধা দেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ চলছিল। এ নিয়ে সোমবার বিকেল ৫টার দিকে তানজিলাকে বেদম মারধর করে জুয়েল। একপর্যায়ে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করে জুয়েল। এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য লাশের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের ফ্যানে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজায়। সন্ধ্যার দিকে এলাকাবাসী এ ঘটনা বুঝতে পেরে লাশ উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন জানান, তানজিলার মরদেহে বিভিন্ন স্থানে জখম ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রচণ্ড নির্যাতন করে তানজিলাকে হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁদের ধারণা।
তানজিলাকে জুয়েল হত্যা করেছে অভিযোগ করে আজ সকালে এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। দুপুরে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষ হয়। এর পর তানজিলার লাশ নিয়ে তাঁর স্বজন ও এলাকার কয়েকশ মানুষ বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি জেলা শহরের প্রধান কয়েকটি সড়ক ও চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড ঘুরে পাগলা কানাই মোড় এলাকায় শেষ হয়। সেখানে সমাবেশে তানজিলার বাবা ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বক্তব্য রাখেন। তাঁরা অবিলম্বে জুয়েল ও তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তার করার দাবি করেন।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আনিসুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে সোমবার রাতেই তানজিলার বাবা আবদুল গণি একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঘটনার পর থেকে জুয়েলসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা পলাতক।