মোংলা বন্দরে আটকে আছে পদ্মা সেতুর মালামাল

নৌযান শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ফলে মোংলা বন্দরে পুরোপুরি অচলাবস্থা বিরাজ করেছে। আজ শনিবারও বন্ধ ছিল সব ধরনের কাজ। আর এ বন্দরে আটকে আছে পদ্মা সেতুর জন্য আমদানি করা মালামাল।
গত ১৯ আগস্ট চীন থেকে প্রায় ১১ হাজার ২৫৫ টন পাইলিং শিট নিয়ে মোংলা বন্দরে আসে এমভি এভার প্রোগ্রেজ। ধর্মঘটের কারণে জাহাজ থেকে এসব মালামাল খালাস হচ্ছে না। জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট টিএম মেরিটাইমের ব্যবস্থাপক মো. জামিনী জানান, জাহাজটি বর্তমানে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের হাড়বাড়িয়া অ্যাঙ্করেজে অবস্থান করছে। জাহাজটি বন্দরে আসার পর স্বাভাবিক গতিতে চলছিল খালাস কাজ। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে জাহাজে এখন প্রায় তিন হাজার ৭০০ টন পাইলিং শিট আটকে আছে। তিনি আরো বলেন, ‘জাহাজ থেকে শিটগুলো খালাস হয়ে পদ্মা সেতু এলাকায় না যাওয়ার ফলে সেখানকার কাজে স্বাভাবিকভাবে বিঘ্ন ঘটবে। এ স্টিল শিট দিয়েই সেতুর পাইলিং পাইপ তৈরি হবে।’
জাহাজের মালামাল খালাস কাজে নিয়োজিত ক্যারিং এজেন্ট মো. জাবেদ বলেন, ‘নৌযান ধর্মঘটের কারণে লাইটার (পণ্য পরিবহনের নৌযান) না পাওয়ায় মূলত মালামাল খালাস করা যাচ্ছে না।’
এদিকে ধর্মঘটের কারণে প্রতিদিন বড় অঙ্কের লোকসান গুনতে হচ্ছে বন্দর ব্যবহারকারীদের। নৌশ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ওয়েজুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘বৃহস্পতিবার মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠক হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। এরপর মালিকপক্ষের কাছ থেকে আর কোনো বৈঠক কিংবা সমঝোতা প্রস্তাব পাওয়া যায়নি।’ যতক্ষণ পর্যন্ত শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ ৪ দফা দাবি বাস্তবায়ন না করা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এ ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী মেসার্স নুরু অ্যান্ড সন্সের মালিক এইচ এম দুলাল বলেন, ‘চলমান নৌযান ধর্মঘটের ফলে মালামাল বোঝাই-খালাস করতে না পেরে বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের লোকসানের পাশাপাশি চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ধর্মঘটের কারণে বন্দরে আটকে রয়েছে পদ্মা সেতুর নির্মাণের মালামালও। পদ্মা সেতু দেশের সম্মান ও মর্যাদার রক্ষার বিষয়। এ কাজে বিঘ্ন ঘটলে অর্থনৈতিক এবং ব্যবসায়িক উভয় দিক থেকেই ক্ষতি হচ্ছে, যা অর্থের হিসাবে নিরূপণ করা কঠিন।’