ডিসির মৃত্যুতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে শোক, জানাজায় হাজারো মানুষ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলামের মৃত্যুতে জেলা প্রশাসনসহ সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আজ সোমবার বিকেলে শহরের ফকিরপাড়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে তাঁর জানাজা শেষে মরদেহ গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার শুকতাইল গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে নেওয়া হয়।
এর আগে রাজশাহী থেকে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলামের মরদেহ দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে তাঁর কর্মস্থল চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসকের বাংলোয় আনা হলে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। দীর্ঘ সময়ের তাঁর সহকর্মীসহ নানান শ্রেণি-পেশার মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়ে। এরপর মরদেহ নেওয়া হয় শহরের ফকিরপাড়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে।
আগেই ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল বিকেল ৩টায় ফকিরপাড়া ঈদগাহ ময়দানে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। ঘোষণা অনুযায়ী দুপুরের পর থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্নস্তরের বিপুল মানুষ সমবেত হন ঈদগাহ ময়দানে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর বিকেল সোয়া ৪টায় অনুষ্ঠিত হয় জানাজা। এতে অংশ নেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার আবদুল হান্নান, পুলিশ সুপার মোজাহিদুল ইসলাম, বিজিবির ৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল এহসান, জেলা পরিষদের প্রশাসক মইনুদ্দীন মণ্ডল, সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র সাইদুর রহমান, নাচোল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কাদের, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল আমীনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠনের নেতারা।
জানাজা শুরুর আগে প্রয়াত জেলা প্রশাসকের দায়িত্বপালনের সময় কাজের বর্ণনা দিতে আলোচনা করেন বিভিন্ন নেতারা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র সাইদুর রহমান বলেন, ‘দায়িত্বপালনকালে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে যেভাবে ভাবতেন, পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন অনেক রাজনৈতিক নেতাও সেভাবে ভাবেননি। তিনি পরিচ্ছন্ন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা গড়তে চেয়েছিলেন।’
পুলিশ সুপার মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সম্প্রতি জেলা প্রশাসক মহোদয় চাঁপাইনবাবগঞ্জকে গ্রিন ডিস্ট্রিক্ট করতে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। কাজও শুরু করেছিলেন। আমরা তাঁর সেই ইচ্ছে পূরণ করব।’
বিভাগীয় কমিশনার আবদুল হান্নান বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের দায়িত্বপালনকালে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ ঘিরে যে উন্নয়ন চিন্তাগুলো করেছিলেন তা বাস্তবায়ন করতে আপনারা এগিয়ে আসুন। এ কাজে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম আজ সকালে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সভায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলে, মাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।