ফেসবুকে পরিচয়-সম্পর্ক, প্রেমিকের ঝুলন্ত লাশ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয়। এরপর প্রেম। স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন ছয় মাস ধরে। সেই বাসা থেকে প্রেমিকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, খুলনার সোনাডাঙ্গার গোবরচাকা এলাকার একটি ভাড়া বাসায় ছয় মাস ধরে ‘বিবাহিত’ পরিচয়ে থাকতেন মো. রাশেদুজ্জামান (৩০) ও তাঁর প্রেমিকা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ওই বাড়ি থেকে রাশেদুজ্জামানের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস জানান, ঘটনাস্থল থেকে যুবকের মৃতদেহ উদ্ধারের পাশাপাশি প্রেমিকাকে আটক করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে প্রেমিকা স্বীকার করেছেন, ফেসবুকে রাশেদুজ্জামানের সঙ্গে পরিচয়ের পর থেকে ছয় মাস ধরে একসঙ্গে থাকতেন তাঁরা। এর মধ্যেই দুজনের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়।
বুধবার রাতে মোবাইল ফোন নিয়ে ঝগড়া ও তর্কের একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। একপর্যায়ে দুজনই প্রতিজ্ঞা করেন, তাঁরা আর একসঙ্গে থাকবেন না। এরপর রাশেদুজ্জামান নিজের বেল্ট দিয়ে নিজের পিঠ চাবকাতে চাবকাতে বলতে থাকেন, ‘আমার সব শেষ হয়ে গেছে।’
একপর্যায়ে গভীর রাতে প্রেমিকাকে ঘরের বাইরে বের করে দেন রাশেদুজ্জামান। প্রেমিকা অন্য ঘরে গিয়ে শুয়ে থাকেন। সকালে প্রেমিকা ঘরের ভেতর থেকে প্রেমিকের সাড়া শব্দ না পেয়ে দরজায় ধাক্কা দিতে থাকেন। প্রতিবেশী ও বাড়ির মালিক এসে দরজা ভেঙে রাশেদুজ্জামানের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।
এরপর এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। আর প্রেমিকাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওই তরুণীকে তাঁর বাবার জিম্মায় দেওয়া হয়।
ওসি আরো জানান, মৃত রাশেদুজ্জামানের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলায়। তিনি খুলনায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। লাশ উদ্ধারের পর রাশেদুজ্জামানের পিঠে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে বলেও জানান ওসি।
এদিকে রাশেদুজ্জামানের মৃত্যুর খবর শুনে থানায় আসেন তাঁর বড় বোন।
ওসি দাবি করেন, রাশেদুজ্জামানের বোন থানায় লিখিত দিয়েছেন যে তাঁরা মামলা করবেন না। পরে পুলিশ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করে। ওসি জানান, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।