নাসিরনগরের হামলাকারীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবে : তোফায়েল

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাটের ঘটনায় জড়িতরা যে দলেরই হোক না কেন তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর এ সদস্য বলেন, ‘আমরা এ ঘটনার ঘৃণা করি, নিন্দা জানাই। এবং সে যে দলের হোক, যে মতের হোক; আমার দলেরও যদি হয়, তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আমরা দেব।’
আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামে ‘দশম আন্তর্জাতিক উইম্যান এসএমই এক্সপো-২০১৬’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নগরীর রেলওয়ে স্টেডিয়াম পলোগ্রাউন্ডে মাসব্যাপী এ মেলা শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি মাহাবুবুল আলম, ব্যবসায়ী নেতা মনোয়ারা হাকিম আলী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
গত ২৮ অক্টোবর (শুক্রবার) নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের রসরাজ দাস নামের এক যুবক পবিত্র কাবাঘরের ছবি সম্পাদনা করে ফেসবুকে পোস্ট করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এরপর স্থানীয় লোকজন তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে শনিবার দিনভর নাসিরনগর সদর উত্তাল হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় পরদিন রোববার উপজেলা সদরের কলেজ মোড়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। সমাবেশ চলাকালে সদরের কয়েকটি মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িতে হামলা হয়।
ভাঙচুরের ঘটনায় নাসিরনগর থানায় দুটি মামলা করেন। স্থানীয় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পুলিশ সদর দপ্তরের উদ্যোগে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদেরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ঘটনার তিনদিন পর এলাকায় যান স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক। চারদিনের মাথায় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।
এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নাসিরনগর উপজেলার পশ্চিমপাড়ার দুটি ঘর ও দক্ষিণপাড়ার তিনটি ঘরে আবারো আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। রাত আড়াইটা থেকে ৩টার দিকে দুটি পাড়ার গোয়ালঘর ও রান্নাঘরে আগুন দেয় দুবৃর্ত্তরা। তবে এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ঘটনার ধারাবাহিকতায় গতকাল শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩ জনকে আটক করা হয়। এই নিয়ে মন্দিরে হামলা ও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনায় আটকের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৪-এ।
এর আগে এ দিন বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগ জানায়, ঘটনায় জড়িত অভিযোগে দলের হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক আহম্মেদ, চাপড়তলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুরুজ আলী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহপ্রচার সম্পাদক আবুল হাশেমকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।