ঝালকাঠির চাচৈর যুদ্ধের দিন আজ

আজ ১৩ নভেম্বর। মুক্তিযোদ্ধাদের সাফল্যগাথায় ঝালকাঠির চাচৈর সম্মুখযুদ্ধের দিন আজ। একাত্তরের এই দিনে ঝালকাঠি সদর উপজেলার নথুল্লাবাদ ইউনিয়নের চাচৈর গ্রামে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোসর রাজাকারের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল লড়াই হয়।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলা চাচৈর রণাঙ্গনের এই যুদ্ধ ৯ নম্বর সেক্টরের অন্যতম বড় যুদ্ধ হিসেবে পরিচিত। মুক্তিযোদ্ধারা এখানকার মতো সাফল্য সেক্টরের অন্য কোথাও পাননি। চাচৈর ছাড়া আশপাশের কয়েকটি গ্রামেও যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন ওমরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি গ্রুপ যুদ্ধে অংশ নেয়। এ যুদ্ধে আবদুল আউয়াল নামের এক মুক্তিযোদ্ধা ও দুই শিশুসহ পাঁচজন মারা যান। অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে শতাধিক পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকার নিহত হয়। একপর্যায়ে পাকিস্তানি সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
এ ঘটনার জেরে পরদিন ১৪ নভেম্বর ফের ওই এলাকায় হানা দেয় পাকিস্তানি সেনারা। হানাদাররা তিন শতাধিক বাড়িঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে। চাচৈর রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধাদের সাফল্য আর হানাদার বাহিনীর চরম পরাজয়ের খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও প্রচারিত হয়েছিল।
ঝালকাঠি জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এম এ বায়েজিদ বলেন, ‘একাত্তরে চাচৈরের মতো দীর্ঘ সময় ও সম্মুখ যুদ্ধ বরিশালে কোথাও হয়নি। এদিন আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণ দিয়ে হলেও শত্রুদের মোকাবিলা করে বিজয়ী হয়েছেন। এটা আমাদের গৌরবের একটি দিন। দিনটি উপলক্ষে আজ রোববার সন্ধ্যায় আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। ’
স্বাধীনতার চার দশক পরও ঐতিহাসিক চাচৈর রণাঙ্গনের স্মৃতি ধরে রাখতে আজ পর্যন্ত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে বহু আবেদন-নিবেদন করেও কোনো ফল মেলেনি। এ নিয়ে এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যসহ স্বাধীনতাকামী মানুষের মধ্যে ক্ষোভও রয়েছে।