ট্রেন থেকে ফেলে হত্যার দায়ে দুজনের ফাঁসি

টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনতাই করে ট্রেনের ছাদ থেকে ফেলে এক যাত্রীকে হত্যার দায়ে দুজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন গাজীপুরের একটি আদালত।
একই ঘটনায় অপর দুই যাত্রীকে আহত করার অপরাধে ওই দুজনকে পেনাল কোডের ৩০৭/৩৪ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া পেনাল কোডের ৩৯২/৩৪ ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো একমাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে ওই দুই অপরাধীকে।
গাজীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ কে এম এনামুল হক আজ বুধবার দুপুরে আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দিয়েছেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইজীবী মো. হারিছ উদ্দিন আহম্মেদ ও আসামিপক্ষে মো. ইউসুফ আলী গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলেন ময়মনসিংহের তারাটি চরপাড়া গ্রামের রাসেল মিয়া (১৯) এবং মৌলভীবাজার জেলার বিছামনি গাংপাড়া গ্রামের মুন্না মিয়া (২৫)।
গাজীপুর আদালতের পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম জানান, চলতি বছরের ২২ মার্চ রাতে আন্তনগর মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিল। শাহজালাল আান্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্টেশন থেকে ওই ট্রেনের ছাদে চড়েন বগুড়ার দুপচাচিয়া থানার জিয়ানগর গ্রামের মো. আব্দুল আজিজের ছেলে মো. আবু সাঈদ (১৮), কক্সবাজারের উখিয়া থানার রুমকা গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে হাসান মাহমুদ (২৬) ও নওগাঁর বদলগাছি থানার মিঠাপুর ফকিরপাড়া গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে আব্দুল মমিন (১৮)।
পরে কালীগঞ্জের শিমুলিয়া এলাকায় মোমিন, সাঈদ ও মাহমুদের ফোন ও টাকা ছিনতাই করে দুর্বৃত্তরা মারপিট ও ছুরিকাঘাত করে ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আব্দুল মোমিন মারা যান এবং অপর দুজন গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
পরের দিন নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এটিএসআই মো. মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে ভৈরব রেলওয়ে থানায় মামলা দায়ের করে। পরে আহতদের জবানবন্দি নিয়ে দুজনকে ২৭ মার্চ গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
তদন্ত শেষে ভৈরব রেলওয়ে থানার এসআই মো. আদম আলী চলতি বছরের ৩১ জুলাই অভিযোড়পত্র দেন। মামলাটি পরে ভৈরব থানা থেকে গাজীপুর জজ আদালতে পাঠানো হয়। ৩১ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের পর ১৩ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ বিচারক মামলার রায় দেন।