নরসিংদীর ডিসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন মেয়র

নরসিংদীতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ জামান, পাসপোর্ট ও সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরের দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরে প্রমাণাদি উপস্থাপন করেন অভিযোগকারীরা।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অধীনস্থ জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে জেলা প্রশাসন ও সদর উপজেলা প্রশাসন এই গণশুনানির আয়োজন করে।
গতকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে দিনব্যাপী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. নাসির উদ্দীন আহমেদ।
গণশুনানিতে অংশ নেন নরসিংদীর সদর উপজেলার ১১টি দপ্তরের কর্মকর্তারা। দুর্নীতি আক্রান্ত উপজেলার সহস্রাধিক সাধারণ মানুষ নানা ক্ষোভ নিয়ে অংশ নেয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জসিম হায়দার।
এ সময় নরসিংদী পৌরসভার মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ জামানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। মেয়র বলেন, জেলা প্রশাসক দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে ৮৫ শতাংশ সরকারি খাস জমি ব্যক্তি মালিকানায় দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন।
জবাবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জসিম হায়দার বলেন, জেলা প্রশাসক খাস জমি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু এখনো তো কাউকে দেননি। এখানে দুর্নীতির অভিযোগ সত্য নয়।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক কমিশনার নাসির উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আপনাদের কাছে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো কাগজপত্র বা প্রমাণাদি থাকে আমাদের দেন। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
নরসিংদীর ১১টি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে বক্তব্য দেন নরসিংদী পৌরসভার মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল, সাংবাদিক মাজহারুল পারভেজ মন্টি, আনোয়ার হোসেন কমিশনার, জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দ্বীপক কুমার সাহা, নুরালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আবু ছালেহ চৌধুরী, আবদুল বাছেদ, দেলুয়ার হোসেন, বকুল ভূইয়া, জান্নাতুল ফেরদৌস, এনায়াতুল ইসলাম, রাজু মোল্লা, লাভলী বেগম ও সোলেমান কবির।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে দুর্নীতির অভিযোগ খণ্ডন করে জবাব দেন নরসিংদী তিতাস গ্যাসের ভারপ্রাপ্ত উপমহাব্যবস্থাপক মো. তৌহিদুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক পাসপোর্ট মুরাদ চৌধুরী, পল্লী বিদ্যুতের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মোশারফ হোসেন, সাব-রেজিস্ট্রার মো. নুরুল হক, সদর উজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদ কামালসহ বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োজিত ১১ জন কর্মকর্তা।
অভিযোগ শুনানি শেষে দুদক কমিশনার নাসির উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ ও অপরাধী যেই হোক সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ব্যাপারে আমাদের পক্ষ থেকে জিরো টলারেন্স থাকবে।’