গাজীপুরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহতদের স্মরণ

গাজীপুরে আইনজীবী সমিতির হলরুমে নিষিদ্ধঘোষিত জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) আত্মঘাতী বোমা হামলার ১১তম বার্ষিকী আজ মঙ্গলবার।
নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী এ দিবস পালিত হয়েছে। ২০০৫ সালের ২৯ নভেম্বর গাজীপুর আদালত এলাকায় আইনজীবী সমিতির দুই নম্বর হল রুমে জেএমবি আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায়। ওই হামলায় ছয় আইনজীবী, চার বিচারপ্রার্থী ও হামলাকারী নিহত হন। আত্মঘাতী এ বোমা হামলায় আরো অর্ধশতাধিক আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী আহত হন।
দিবসটি পালন উপলক্ষে আজ সকালে কালো পতাকা উত্তোলন ও বারের সব আইনজীবী কালোব্যাজ ধারণ করেন। এ সময় গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতি ভবন প্রাঙ্গণে বোমা হামলায় শহীদদের স্মরণে স্থাপিত ‘স্মৃতি শিখা অনির্বাণ’ এ আইনজীবী সমিতি, গাজীপুর জজশিপ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, ম্যাজিস্ট্রেসি ও পুলিশের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে আইনজীবীরা মৌন মিছিলসহ শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।
দুপুরে গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতি ভবন প্রাঙ্গণে শহীদ আইনজীবীদের স্মরণে ও আহত আইনজীবীদের সুস্থতা কামনায় শোকসভা, মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম এনামুল হক।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ড. শহিদ উজ্জামানের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বক্তব্য দেন গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সৈয়দ জায়েদ মনসুর, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফজলে এলাহী, জিপি আমজাদ হোসেন বাবুল, পিপি হারিছ উদ্দিন আহমেদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, বারের সাধারণ সম্পাদক মো. এমরান হোসেন, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট নূরুল আমিন, ওয়াজ উদ্দিন মিয়া, অ্যাডভোকেট আব্দুস ছোবহান, আব্দুস সাত্তার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন।
২০০৫ সালের ২৯ নবেম্বর গাজীপুর আদালত এলাকায় আইনজীবী সমিতির দুই নম্বর হল রুমে জেএমবির এক সদস্য আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায়। ওই হামলায় ছয় আইনজীবী, চার বিচারপ্রার্থী ও হামলাকারী নিহত হন।
আত্মঘাতী এ বোমা হামলায় আরো অর্ধশতাধিক আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী আহত হন। ওই ঘটনায় দায়ের করা তিনটি মামলার মধ্যে ঘটনার প্রায় আট বছর পর ২০১৩ সালের ২০ জুন একটি একটি নিষ্পত্তি হয়। এ মামলায় অভিযুক্ত ১০ জেএমবি সদস্যের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন দ্রুত বিচার আদালত-৪। বাকি দুটি মামলা ঢাকায় দ্রুত বিচার (বিশেষ) আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
ঘটনাস্থলে নিহতরা হলেন- জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আমজাদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল আজিম, অ্যাডভোকেট নুরুল হুদা, অ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক অভি ও অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন মাখন। এ সময় মারা যান জেএমবি সদস্য শরিয়ত উল্লাহ ওরফে আসাদুল ইসলাম ছাড়া বিচার প্রার্থী আব্দুর রউফ, বশির মেম্বার, শামসুল হক ও মর্জিনা বেগম। অন্যরা পরে মারা যান। এ ঘটনার একদিন পর ১ ডিসেম্বর দুপুরে আবারও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ফটকের পাশে জেএমবির এক আত্মঘাতী সদস্য ফ্ল্যাক্স বোমা হামলা চালায়। এতে কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম সরকার নিহত এবং সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়।